আমার পরিবারের সব আনন্দ কেড়ে নিয়েছে খেতা শাহ
'ঈদে সবাই যখন আনন্দ করছে তখন আমার তিন শিশু সন্তান শুধু কান্নাকাটি করে যাচ্ছে। মাকে ছাড়া তারা কিছুতেই থাকতে চাচ্ছে না। কোনোভাবেই আমি তাদের সান্ত্বনা দিতে পারছি। ঈদে সন্তানদের ছাড়া তাদের মা অন্য কারও কাছে থাকবে এটা কখনো কল্পনাও করিনি। আমার পরিবারের সব আনন্দ কেড়ে নিয়েছে ভণ্ড ফকির খেতা শাহ।'
আক্ষেপ আর কষ্ট নিয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ময়মনসিংহের তারাকান্দার শফিকুল ইসলাম। স্ত্রীকে নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে শফিকুলের সংসারের সবকিছু ওলটপালট করে দিয়েছে কথিত ফকির খেতা শাহ। তাই মা ছাড়া তিন সন্তানকে নিয়ে ঈদের সময়টা কাটছে বিরহ বেদনায়।
বিজ্ঞাপন
শফিকুল বলেন, ১১ বছর বয়সী বড় ছেলে কিছুটা মেনে নিতে পারলেও ৯ বছর ও ৭ বছর বয়সী দুই মেয়েকে কোনোভাবেই বোঝাতে পারছি না। এদিকে আমিও প্রচণ্ড জ্বরে ভুগছি। তাই স্ত্রীকে খুঁজতে পারছি না।
জানা গেছে, দেড় মাস আগে কথিত ফকির খেতা শাহকে বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় দেন শফিকুল। স্ত্রীকে বলেছিলেন ভালোভাবে আপ্যায়ন করতে। সবকিছু ভালো ভাবেই চলছিল। গত ২২ জুন দুপুর ১২টার দিকে শফিকুলের স্ত্রী বাবার বাড়ি ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় যাওয়ার কথা বলে খেতা শাহকে নিয়ে লাপাত্তা হন দুইজনই।
বিজ্ঞাপন
একদিন পর খেতা শাহের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন শফিকুল ইসলাম। শুক্রবার রাত ১২টার দিকে তার অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিবদ্ধ করা হয়। কিন্তু এখনো পাওয়া যায়নি তাদের।
৬০ বছর বয়সী ফজলুল ওরফে খেতা শাহের বাড়ি নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার পাইলাটি গ্রামে। নিজেকে আধ্যাত্মিক ফকির হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি পেতে কথাও বলতেন খুব কম। এভাবে গ্রামের সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন করেন তিনি। আধ্যাত্মিক ফকির ভেবে খেতা শাহের ভক্ত বনে যান শফিকুলও। সংসারের উন্নতি আর মনের বাসনা পূরণের ধারণা থেকে দুই চাচার পরামর্শে নিয়ে আসেন বাড়িতে। তবে সেই সব ধারণা ভুল প্রমাণ করেই স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়েছেন খেতা শাহ।
এ বিষয়ে তারকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, খেতা শাহকে গ্রেপ্তার করতে আমরা সব রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে সহজে তার অবস্থান নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। আশা করছি দ্রুতই তাকে গ্রেপ্তার করতে পারব।
উবায়দুল হক/আরআই