পাবনা সদর হাসপাতালের রোগী ও তাদের স্বজনদের দুর্ভোগের চিত্র দেখে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স। ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন সোমবার (১১ জুলাই) দুপুরে হাসপাতালে রোগীদের খোঁজখবর নিতে যান তিনি।

এ ছাড়া চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি, অপরিচ্ছন্নতা ও খাবারের নিম্নমান নিয়েও চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

গোলাম ফারুক প্রিন্স জানান, পাবনা সদর হাসপাতাল কেবল সদর উপজেলা নয়, পুরো পাবনা জেলার প্রায় ৩০ লাখ মানুষের চিকিৎসায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। বিপদগ্রস্ত হয়েই মানুষ এখানে আসে। আর ঈদের দিনগুলোয় বিপদাপন্ন, সংকটে থাকা মানুষ আরও বেশি অসহায় বোধ করে।

তিনি বলেন, তাদের সাহস দিতে, মনোবল ধরে রাখতে প্রতি ঈদেই আমি হাসপাতাল পরিদর্শন করে সাধারণের খোঁজখবর নিই। সে ধারাবাহিকতায় সোমবার হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে যা দেখেছি, তাতে আমি চরম হতাশ। এক কথায় চিকিৎসক ও হাসপাতাল প্রশাসন দায়িত্ব জ্ঞানহীন আচরণ করেছেন।

প্রিন্স বলেন, জরুরি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকারি হাসপাতালে সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সোমবার হাসপাতালে গিয়ে আমি চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের অধিকাংশই অনুপস্থিত দেখেছি। এমনকি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ওমর ফারুক মীরকে জানিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পরেও তিনি আসেননি। পুরো হাসপাতালে নোংরা, দুর্গন্ধ। ঈদের দিনেও হাসপাতালে দেওয়া হয়েছে নিম্নমানের খাবার। দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে সাধারণ মানুষের প্রতি এমন আচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রত্যাশিত। আমি এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জানাব।

সরকার সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে পাবনায় পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অত্যাধুনিক সিটি স্ক্যান, এক্স-রে মেশিন সংযোজন করেছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তা প্রায় সময় বন্ধ ও অকার্যকর থাকে। হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে আমি এসব বিষয়ে জরুরি নির্দেশনা দিয়েছি। কিন্তু তার কোনোটিই বাস্তবায়িত হয়নি। জনগণের কাছে সরকার, জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহি করতে হয়। স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলা আমরা মেনে নিতে পারি না।

এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। আগামী বৈঠকে আমি এসব বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইব।

এ বিষয়ে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ওমর ফারুক মীর বলেন, সকালে হাসপাতালে চিকিৎসকরা রাউন্ড দিয়েছেন। এমপি মহোদয় পরিদর্শনের সময় আমি নামাজের জন্য বাইরে ছিলাম। ডিউটি ডক্টররাও হাসপাতালেই থাকার কথা, কিন্তু তারা কোথায় ছিলেন তখন, আমি সঠিক জানি না।

আর ঈদে এক দিন উন্নত খাবার দেওয়া হয়, সেটি ঈদের দিন দেওয়া হয়েছে। সরকারি ছুটির দিন বলে বায়োমেট্রিক উপস্থিতি যন্ত্রেও হাজিরা নেওয়া হয়নি। তাই ঠিক কতজন অনুপস্থিত, তা সঠিকভাবে জানানো সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।

রাকিব হাসনাত/এনএ