পূর্ণিমার জোয়ারের কারণে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধিতে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ও রামপাল উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন প্লাবিত হওয়া গ্রামগুলোর বাসিন্দারা। 

এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে অন্তত ২০০ ঘের তলিয়ে গেছে। শুক্রবার সকালে স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় ৩-৪ফুট পানি বৃদ্ধি পেলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। সমস্যা সমাধানের প্লাবিত এলাকায় রিং বাঁধ দেওয়ার দাবি স্থানীয়দের। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হবে।

মোড়েলগঞ্জের পানগুছি নদীর পানি ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় মোড়েলগঞ্জ পৌরসভার কাপুড়পট্টি সড়ক, কাচা বাজার, ফেরিঘাট, কালাচাঁদ মাজার এলাকা, সানকিভাঙা প্লাবিত হয়েছে। এর বাইরেও উপজেলার ঘষিয়াখালী, জিউধরার পালেরখন্ড, কাকরাতলী, শনিরজোড়, সোনাতলা, চন্দনতলা, জিউধরা, হোগলাবুনিয়ার ও বারইখালীসহ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

মোড়েলগঞ্জের পৌর এলাকার চা দোকানি জামাল শেখ বলেন, দুই দিন ধরে জোয়ারের পানিতে পৌরসভার সবজায়গায় পানিতে তলিয়ে গেছে। দুপুর সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে পানি উঠে যায় সবখানে। চেয়ার দিয়ে বসে কোনো রকম দোকানদারি করছি। কিন্তু বেচা-কেনা খুবই কম হচ্ছে। 

অন্যদিকে মোংলা-ঘষিয়াখালী বঙ্গবন্ধু নৌ চ্যানেলসহ দাউদখালি, বগুড়া, তেতুলিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রামপাল উপজেলার গিলাতলা বাজার, বাঁশতলী, ভোজপাতিয়া, হুড়কা, রাজনগরসহ পেড়িখালি ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। মোংলা উপজেলারও কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এর আগে বুধবার (১৩ জুলাই) বিকেলে ভৈরব নদের পানির চাপে বাগেরহাট সদর উপজেলার কেশবপুর এলাকার একটি কালভার্ট ও কালভার্টের দুই পাশের প্রায় ২০ ফুট রাস্তা বিলীন হয়েছিল। উপজেলার প্রশাসনের অর্থায়নে তাৎক্ষণিকভাবে বালুর বস্তা ও মাটি দিয়ে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ জানান, পূর্ণিমার প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের সময় সকল নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে রামপাল ও মোরেলগঞ্জ এলাকার বেশ কিছু এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। মূলত এসব এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকার কারণে জোয়ারের পানি সহজে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে জোয়ারের পানি আটকানোর জন্য প্রকল্প প্রস্তাবনা দেওয়া হবে। প্রকল্প অনুমোদন হলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

তানজীম আহমেদ/এসকেডি