যশোরের চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীতকরণের কাজে ব্যাপক অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এসব অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং উপজেলা প্রশাসন একাধিকবার এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে সতর্ক করলেও লাগাতার অনিয়ম করেই কাজ করে যাচ্ছে ঠিকাদাররা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, নিম্নমানের ইট দিয়ে গাঁথুনি, গাঁথুনি করা ওয়ালে পানি দিয়ে কিউরিং না করা, ঢালাইয়ের কাজ শেষের পর সেসব স্থানের রড, কাঠ ইত্যাদি বের হয়ে রয়েছে। এছাড়া নিম্নমানের ইট দিয়ে অপরিচ্ছন্ন গাঁথুনিসহ নানা অনিয়ম দেখা যাচ্ছে। 

জানা যায়, গত ৩০ জুন উপজেলা পরিষদের মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় হাসপাতালের উন্নয়ন কাজে অনিয়মের বিষয়টি উপস্থাপন করেন সিংহঝুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ মল্লিক। পরে অনিয়মের বিষয় তদন্তের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীর নেতৃত্বে সিংহঝুলী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ মল্লিক এবং ধুলিয়ানী ইউপি চেয়ারম্যান এসএম মোমিনুর রহমানকে সদস্য করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থলে গিয়ে অনিয়মের সত্যতা পান। যা গত ৩১ জুলাই উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় তদন্ত কমিটির সদস্যরা উপস্থাপন করেন। 

অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের অসাধু প্রকৌশলীদের নিশ্চুপ থাকার সুযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমসিএল- এইচই কনসোর্টিয়াম অনিয়ম করে যাচ্ছেন। ঘটনাস্থলে থাকা অবস্থায় স্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তর যশোরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফ এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ইমরান এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। 

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ইমরান জানান, পানি দিয়ে কিউরিং এবং হানিকমে বোর না মারার বিষয়টি লজ্জাজনক। এছাড়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে দেড় নম্বর ইট দিয়ে কাজ করছেন বলেও তিনি স্বীকার করেন। পরবর্তীতে ভালো ইট দিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছা. লুৎফুন্নাহার বলেন, আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার ভালো উপকরণ দিয়ে কাজ করার জন্য বললেও তারা বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, উপজেলা পরিষদের মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিংহঝুলী ইউপি চেয়ারম্যান অনিয়মের বিষয়টি উপস্থাপন করেন। পরে এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটির সদস্যরা নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করার সত্যতাও পেয়েছেন। ঠিকাদারকে ভালো মালামাল দিয়ে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা আনইশৃঙ্খলা কমিটির সভার রেজুলেশন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।

এসপি