ইনসার্টে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম হোসেন

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় প্রধান অতিথি না করায় খেলা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। শুধু তা-ই নয়, এ সময় উপস্থিত অতিথি ও শিক্ষকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করেন তিনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার আলিমুদ্দিন সরকারি কলেজ মাঠে ওই টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন সেলিম হোসেন। তিনি উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান চেয়ারম্যান।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের টংভাঙ্গা ইউনিয়নের ফাইনাল খেলার আয়োজন করা হয় আলিমুদ্দিন সরকারি কলেজ মাঠে। দুপুরের মধ্যে বালিকাদের খেলা শেষ হয়। এতে জয়লাভ করে ২ নং মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এরপর বিকেলে বালকদের খেলা শুরু হয়। খেলা চলা অবস্থায় মাঠে উপস্থিত হন টংভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম হোসেন। তিনি প্রবেশ করেই দেখেন যে ব্যানারে প্রধান অতিথি হিসেবে তার নাম নেই। শুধু সভাপতি হিসেবে লেখা রয়েছে। তা দেখেই তিনি সেখানে উপস্থিত সবাইকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। এ সময় খেলাও বন্ধ করে দেন তিনি। পরে খেলাটি অসম্পূর্ণ রেখে সেখান থেকে সবাই চলে যান।

প্রত্যক্ষদর্শী বারো দুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরনবী ইসলাম বুলবুল বলেন, খেলা চলাকালীন হঠাৎ সেলিম চেয়ারম্যান এসে অকথ্য ভাষায় উপস্থিত সবাইকে গালিগালাজ শুরু করেন এবং খেলা বন্ধ করে দেন। তাকে প্রধান অতিথি না করায় তিনি রেগে গিয়ে এমন কাজ করেন বলে ওই প্রধান শিক্ষক বলেন।

২ নং মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরনবী বলেন, একটি খেলা শেষ হয়েছে। অপর খেলাটি শেষ না করেই স্থগিত করা হয়েছে। তবে সেটি কেন করা হয়েছে, তা জানা নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর কয়েকজন শিক্ষক বলেন, বালকদের খেলা চলাকালীন ওই চেয়ারম্যান মাঠে প্রবেশ করেই সবাইকে গালিগালাজ শুরু করেন। এরপর খেলা বন্ধ করে দেন। খেলাটি অসম্পূর্ণ অবস্থায় স্থগিত করা হয়।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ জন্য তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

হাতীবান্ধা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলাল হোসেন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম হোসেন মাঠে ঢুকে গালিগালাজ করতে করতে জানতে চান, ‘আমাকে প্রধান অতিথি না করে সভাপতি করা হয়েছে কেন?’ এ কথা বলেই তিনি খেলা বন্ধ করে দেন। তাই খেলাটা অসম্পূর্ণ অবস্থায় শেষ হয়। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজির হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি রাতে। আর ঘটনাটি ঘটেছে বিকেলে। তাৎক্ষণিক জানালে ব্যবস্থা নিতাম। ইউনিয়ন পর্যায়ের খেলায় সভাপতি হতে পারেন ইউপি চেয়ারম্যান। প্রধান অতিথি হওয়ার জন্য এটা তিনি কখনোই করতে পারেন না। যে খেলাটি স্থগিত করা হয়েছে, তা পরে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।

নিয়াজ আহমেদ সিপন/এনএ