‘আমি আমার প্রেমিকা ও তার মা-বাবার বিরুদ্ধে এখনও কোনো অভিযোগ করিনি। আমি মনে করি, তারা ভুল বুঝে আছে অথবা কোনো চাপে আছে। আমি আশা করি, ভুল ভেঙে আমার কাছেই ফিরবে। কিন্তু এখন আমি একা। এভরিওয়ান লিভস মি, এভরিওয়ান...’ বরগুনা ছাড়ার সময় ভগ্ন হৃদয়ে এমনটাই বলেন ভারতের তামিলনাড়ু থেকে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে আসা প্রেমকান্ত। শনিবার (৬ আগস্ট) দুপুরে তিনি বরগুনা ত্যাগ করেন।

গত বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) রাতে বরগুনায় আসেন তামিলনাড়ুর যুবক প্রেমকান্ত। বরগুনায় রাত্রিযাপন করার পর শুক্রবার দুপুরে কথিত প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে বরগুনার তালতলীতে যান তিনি। সেখানে ৫-৬ ঘণ্টা অবস্থান করেও দেখা করতে পারেননি প্রেমিকার সঙ্গে। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় তালতলী ছেড়ে বরগুনায় চলে আসেন। বরগুনার একটি আবাসিক হোটেলে থাকার পরে আজ শনিবার বিকেলে তিনি নিজ দেশের উদ্দেশে বরগুনা ছাড়েন।

বরগুনায় থাকাকালে স্থানীয় কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে পরিচয় হয় তার। শনিবার বরগুনা ছাড়ার সময় তাকে বিদায় জানাতে সেই গণমাধ্যমকর্মীরা বরগুনা পৌর বাস টার্মিনালে উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী রুদ্র রুহান বলেন, বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে আমার ফোনে কল করে পরিচয় দিয়ে বরগুনা আসার জন্য সে সহায়তা চায়। যেহেতু সে ইংরেজিতে কথা বলে, তাই কেউ তাকে আমার নম্বর দিয়েছিল। বরিশালের নথুল্লাদে ছিল সে তখন। পরে রুপাতলী এসে সন্ধ্যায় বাসে করে বরগুনা বাস  টার্মিনালে নামে। এরপর তাকে আমার বাসায় থাকতে দেই। পরের দিন শুক্রবার দুপুরে তালতলী যায়। সন্ধ্যায় ফিরে বরগুনা প্রেসক্লাবে ছিল। সেখান থেকে পুলিশের সঙ্গে কথা বলে রাতে আলম হোটেলে থাকে। পুলিশের সহায়তায় দুপুর ২টার বাসে চলে যায়। ভাষাগত সমস্যার কারণে আমি তাকে সহায়তা করি। আমরা তাকে মিস করব!

তিনি জানান, যাওয়ার সময় প্রেমকান্ত আমাদের বলেন, আমি আমার প্রেমিকা ও তার মা বাবার বিরুদ্ধে এখনও কোনো অভিযোগ করিনি। আমি মনে করি, তারা ভুল বুঝে আছে অথবা কোনো চাপে আছে। আমি আশা করি, ভুল ভেঙে আমার কাছেই ফিরবে। কিন্তু এখন আমি একা। এভরিওয়ান লিভস মি, এভরিওয়ান...

এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর বরগুনা সদরে আসেন ভারতীয় ওই যুবক। পরে তাকে পুলিশ হেফাজতে শহরের আলম বোর্ডিং নামের একটি হোটেলে রাখা হয়। সেখানে রাত যাপনের পর দুপুর ২টার বাসে তিনি বরিশালের উদ্দেশে রওনা হয়ে যান।

প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়ের মাধ্যমে প্রেমকান্তর প্রেম হয় বরগুনার তালতলী উপজেলার এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে। তিন বছর প্রেমের সম্পর্কের পর সরাসরি দেখা করতে গত ২৪ জুলাই বাংলাদেশে আসে ভারতের তামিলনাড়ুর যুবক প্রেমকান্ত। এরপর প্রেমিকার নির্দেশনা অনুযায়ী বরিশালে আসেন তিনি। ভারতীয় ওই নাগরিকের দাবি, বরিশালে তার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা হয়, একপর্যায়ে প্রেমিকার আরেক প্রেমিক দ্বারা মারধরের শিকার হন তিনি। পরে প্রেমিকার সঙ্গে শেষবারের মতো দেখা করতে বরগুনার তালতলীতে আসেন ওই যুবক। সেখানেও প্রেমিকার দেখা না পেয়ে আক্ষেপ নিয়েই তালতলী ত্যাগ করেন তিনি। এদিকে প্রেমকান্তর বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতে তালতলী থানায় জিডি করেন তার কথিত প্রেমিকার পরিবার।

খান নাঈম/এসএসএইচ