খুলনায় এক কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে মাসুদ গাজী (৪৫) নামে একজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে, আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম করাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মাসুদ খানজাহান আলী থানার মাত্তমডাঙ্গা পূর্বপাড়া এলাকার মরিয়ম বেগমের ভাড়াটিয়া আব্দুর রহমান গাজী ওরফে দফাদারের ছেলে।  

বুধবার (১০ আগস্ট) খুলনা নারী নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আব্দুস ছালাম খান এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রুবেল খান ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিমের বাবা খানজাহান আলী এলাকার বাসিন্দা ও রাজমিস্ত্রির হেলপার। তিনি বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে কাজ করেন। কাজের সুবাদে তাকে প্রায়ই বাড়ি থাকতে হয়। এ ঘটনা ঘটার এক বছর আগে তার স্ত্রী মারা যান। যে কারণে তার ১৬ বছর বয়সী একটি কন্যা ও ৮ বছর বয়সী ছেলেকে বাড়িতে একা থাকতে হয়।

এ সুযোগে তার প্রতিবেশী মাসুদ বিভিন্ন প্রলোভন দেখাতে শুরু করে। ২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর আসামি কিশোরীকে বাসায় ডেকে নেন। বাসায় কেউ না থাকায় ওই কিশোরীকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি জানান। পরবর্তীতে অপারগতা প্রকাশ করলে তার গলায় ধারালো দা ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেন মাসুদ। এক পর্যায়ে আসামি ভিকটিমকে ধর্ষণ করেন। এরপর ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেন। পরে ভিকটিমকে আরও কয়েকবার ধর্ষণ করে মাসুদ।

পরবর্তীতে কিশোরী ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। তার বাবা বাড়ি আসলে ঘটনাটি জানানো হয়। তিনি মাসুদের স্ত্রীকে বিষয়টি জানালে উল্টো তাদের হত্যার হুমকি দিয়ে বলা হয় বিষয়টি কাউকে জানালে তোদের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। জেনে রাখ, পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা জহিরুল ইসলাম লাল্টু আমার দেবর। তাদেরকে জানালে তোদের যেকোনো সময় খুন করে ফেলবে।

স্থানীয়দের জানালে কিশোরীর বাবাকে তারা মামলার পরামর্শ দেন। এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা ২০১৬ সালের ২০ জুন বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ০৩) ধারায় মামলা দায়ের করেন, যার নং ৭। উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রোকনুজ্জামান একই বছরের ১১ ডিসেম্বর মাসুদকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মোহাম্মদ মিলন/আরআই