পূর্ণিমার প্রভাবে ভোলায় গত কয়েকদিন ধরে অস্বাভাবিক জোয়ারে নিম্নাঞ্চল এবং বেড়িবাঁধের বাইরের এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত ২৫টি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিশেষ করে চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর, চর নিজাম, মুজিবনগর, মনপুরার কাজিরচর এবং মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকার শত শত একর জমির ফসল ও পুকুরের মাছ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। 

ভুক্তভোগী জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এমন চরম দুর্ভোগের সময় স্থানীয় প্রশাসন কিংবা জনপ্রতিনিধি কাউকে তারা পাশে পাননি।

মনপুরার কাজিরচরের বাসিন্দা মো. সিরাজ মিয়া জানান, জোয়ারের পানিতে সমস্ত ফসলের মাঠ ডুবে গেছে। অন্তত ২০টি পুকুরের কয়েক লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। তার নিজেরও তিনটি পুকুরের প্রায় দুই লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। বহু ঘরের ভিটে পানিতে ধুয়ে গেছে।

চর নিজামের আলম ফরাজী জানিয়েছেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর আরও বেশি পানি উঠেছে। তাই তাদের রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

ঢালচরের ব্যবসায়ী ইসরাফিল হাওলাদার বলেন, ঢালচরের অন্তত ৫ হাজার মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি পানিতে ডুবে গেছে । পানি উঠে আবার নেমে গেলেও লবণাক্ততার সৃষ্টি হওয়ায় জমির উর্বরতা কমে গেছে। ভবিষ্যতে এসব এলাকায় ফসল হবে না বলেও আশঙ্কা করছেন তারা। 

ঢালচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাম হাওলাদার জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। শত শত মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এসব মানুষের জন্য সাহায্য-সহযোগিতার দাবি করছেন তিনি।

জেলা মৎস্য ও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ভোলা জেলায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ভোলা-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানিয়েছেন, ওই সমস্ত এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তাছাড়া পানির উচ্চতা ও চাপ আগের চেয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় এসব অঞ্চলের মানুষকে অস্বাভাবিক জোয়ার থেকে রক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি। 

আরআই