জন্মাষ্টমীর দিনে সরকারি বন্ধেও অফিস করলেন কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দুলাল তালুকদার। বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ দৃশ্য দেখা গেল। 

বন্ধের বিষয়টি না জেনে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে সেবা নিতে কুমিল্লায় আসেন নাজমুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি জানতাম না আজ সরকারি বন্ধের দিন। এসে দেখি পুরো অফিস ফাঁকা। কোনো মানুষজন নেই। দারোয়ান তাকে জানান, আজ সরকারি বন্ধ, আগামী রোববার খোলা।

নাজমুল জানান, তিনি মন খারাপ করে গেট থেকে ফেরত যাচ্ছিলেন। এমন সময় তিন তলা থেকে এক ভদ্রলোক ডাক দিয়ে ওপরে যেতে বললেন।

‘যাওয়ার পর তিনি আমার সমস্যার কথা জানতে চাইলেন। আমি বললাম, আমার মায়ের এনআইডি কার্ডে ৫ বছর বয়স কম লেখা হয়েছে। একই আইডি কার্ডে আমার বাবার নামের বানান ভুল ছিল। গত ২-৩ মাস আগে অনলাইনে আবেদন করেছিলাম। নোয়াখালী নির্বাচন অফিসে গেলে বলল, কুমিল্লা অফিসে যাওয়ার জন্য। স্যার আমার কাগজপত্রগুলো দেখলেন, অনলাইনে যাচাই-বাছাই করে আমার সমস্যাটা সমাধান করে দিলেন’- বলছিলেন নাজমুল।

এ বিষয়ে কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দুলাল তালুকদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমি একজন গেজেটেড কর্মকর্তা। একজন গেজেটেড কর্মকর্তার কোনো ছুটি নেই। কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের আওতাধীন নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ফেনী এবং কুমিল্লার ১৮ হাজার এর মতো জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন জমা আছে 'গ' ক্যাটাগরিতে। মানুষ বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে এ জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন করেছেন। তাদের সেবা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। অফিসে বসে সেসব আবেদনের সঙ্গে সাবমিট করা কাগজপত্রগুলো যাচাই করছি। যাদের কাগজপত্রে ঘাটতি আছে, তাদের মোবাইল নম্বরে মেসেজ পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে বলছি। আমি একজন রাষ্ট্রের কর্মচারী, জনগণের টাকায় আমার বেতন হয়, সেই জনগণের কাজ করতে আমি দায়বদ্ধ। ছুটির দিনে পরিবারকে সময় দেওয়ার বদলে অফিসে সময় দিচ্ছি, জনগণের চেয়ে বড় পরিবার কে হতে পারে?’ 

শুধু দুলাল তালুকদারই নয়, নির্বাচন অফিসে দেখা গেল ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আরিফুল ইসলাম এবং অফিস সহকারী জাকির হোসেনকেও। 

তারা জানান, শুধু আজকে বন্ধের দিনেই নয়। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার নির্দেশে এমন অনেক বন্ধের দিনেও আমাদের অফিস করতে হয়। অনেক সময় শুক্রবারেও অফিস করি। কিছুটা বিরক্ত লাগলেও কিছু করার নেই, স্যারের আদেশ তো পালন করতে।
 
আরিফ আজগর/এমএএস