লক্ষ্মীপুরে স্বামী-স্ত্রীকে টয়লেটে আটকে রাখার ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ করায় ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অশোভন আচরণ করেছেন।

বুধবার (১৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মমিনুল হকের কক্ষে বসেই তিনি এমন আচরণ করেন। পুলিশ কর্মকর্তাও চেয়ারম্যানের অশোভন আচরণের প্রতিবাদ জানান।

এ সময় সাংবাদিকরা প্রতিবাদ করলে নজরুল ইসলাম বলেন, অনেক সাংবাদিক কিছু পাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত আমার কাছে বসে থাকে। সব পেশাতেই ভালো খারাপ আছে। সাংবাদিকদের মধ্যেও হলুদ রয়েছে। হলুদ সাংবাদিকরাই আমার বিরুদ্ধে নিউজ করেছে।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের মুক্তারামপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন ও তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে চেয়ারম্যানের নির্দেশে ঘণ্টাব্যাপী টয়লেটে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় রাতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদটি ছড়িয়ে পড়লে প্রশাসনের নজরে আসে। এতে রাতে চেয়ারম্যানসহ আমজাদের পরিবারকে পুলিশ থানায় ডাকে। সেখানে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মমিনুল হক তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। তখন ব্যবসায়ী আমজাদের বিরুদ্ধে তার মা আয়েশা খাতুন ও মেয়ে লিপি আক্তারের অভিযোগের ঘটনাটি মীমাংসা করে দেন পুলিশ কর্মকর্তা। 

তবে আলোচনার বাইরে থেকে যায় আমজাদ ও তার স্ত্রী জেসমিনকে টয়লেটে আটকে রাখার বিষয়টি। তখন সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। এর আগে থানার সামনেই চেয়ারম্যানের লোকজন ওই দম্পতিকে হুমকি দেন। 

এদিকে থানায় এসেও ভুক্তভোগী স্বামী-স্ত্রী সাংবাদিক ও পুলিশকে জানান- তাদেরকে টয়লেটে আটকে রাখা হয়েছিল। 

ভুক্তভোগী আমজাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমাদেরকে টয়লেটে আটকে রাখার ঘটনা সত্য। পুলিশ আমার মায়ের সঙ্গে আমাদের মিলিয়ে দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের আচরণে আপনারা আমাদের ক্ষমা করে দেবেন। 

জানতে চাইলে চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, আমি উপস্থিত সকল সাংবাদিককে বলিনি। কিছু কিছু সাংবাদিককে বলেছি। ওইসব সাংবাদিক আমার কাছে গিয়ে বসে থাকে। 

পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মমিনুল হক বলেন, টয়লেটে আটকে রাখার ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি। ব্যবসায়ী আমজাদ তার মায়ের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। ঘটনাটি মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে আচরণ নিয়ে তাৎক্ষণিক আমি চেয়ারম্যানকে বুঝিয়েছি। কথাটা বলা উচিত হয়নি বলেও চেয়ারম্যানকে বলেছি।  

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, চেয়ারম্যান ও ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী পরিবারকে থানায় ডাকা হয়েছে। পরে কী হয়েছে তা বলতে পারছি না। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কী হয়েছে, সে বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলব। 

প্রসঙ্গত, নজরুল ইসলাম সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক। 

হাসান মাহমুদ শাকিল/আরএআর