সেতুর গোড়ায় মরণফাঁদ, দুর্ভোগে হাজারো মানুষ
প্রায় ২০ বছর আগে খালের ওপর নির্মাণ করা হয় সেতুটি। লৌহজং ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলাকে সংযোগ করেছে এ সেতু। কিন্তু সেতুর অ্যাপ্রোচ ধসে যাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আছে গাড়ি চলাচল। এতে বিপাকে পড়েছেন যাতায়াতকারী ও যানবাহনের চালকরা।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কলমা পাঠানবাড়ি এলাকার পাঁচগাঁও-কলমা সড়ক এ সেতুর অবস্থান। এর ওপর দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ও যানবাহন যাতায়াত করে।
বিজ্ঞাপন
ধসে যাওয়ার পর থেকে সেতু হেঁটে পার হয়ে বিপরীত পাশে গিয়ে গাড়িতে উঠে যাতায়াত করতে হচ্ছে মানুষকে। এতে বিপাকে পড়েছে যাতায়াতকারীরা। আয় অর্ধেকে নেমে এসেছে যানবাহনের চালকদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটির উত্তর পাশের গোড়ায় সৃষ্টি হয়েছে গভীর গর্ত। দিন দিন গর্তের পরিমাণ বাড়ছে। গর্তের পশ্চিম অংশে একটু মাটির সংযোগ থাকায় তা দিয়ে হেঁটে মানুষ সেতুতে ওঠানামা করছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে পুরো অ্যাপ্রোচটি। এ ছাড়া সেতেুর দক্ষিণ পাশের অ্যাপ্রোচেও সৃষ্টি হয়েছে গভীর খানাখন্দের। সেতু গোড়ার মাটি ধসে গিয়ে অ্যাপ্রোচ নিচু হয়ে থাকায় দক্ষিণ পাশ দিয়েও সেতুতে গাড়ি উঠাতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আকরাম পাঠান ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে পাঠান বাড়ির খালের ওপরে এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। তারপর থেকে নিয়মিত সেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি ও যাত্রী চললেও এক বছর ধরে কয়েকবার ভাঙনের শিকার হয় সেতুটির গোড়ার অ্যাপ্রোচ। এই ভাঙা অ্যাপ্রোচের কারণে এ স্থানে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটলেও রাস্তাটি সংস্কার করা হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, আট থেকে নয় মাস আগে ভাঙা অ্যাপ্রোচে বাইক উল্টে এক ব্যক্তির নিহত হন। এ ছাড়া একাধিক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ব্যক্তিরা কয়েকবার এই সেতুর গোড়া সংস্কার করেন। কিন্তু স্থায়ীভাবে সংস্কার না করায় বারবার এ ব্রিজের গোড়া ভেঙে যাচ্ছে।
অটোরিকশাচালক সোহেল বলেন, আগে এই সেতুর গোড়া ঠিক থাকায় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় করতে পারতাম। এখন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকাও হয় না। এই পথে মানুষও এখন কম আসে। অন্য দিক দিয়ে ঘুরে চলে যায়। এই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে আমরা খুব কষ্টে আছি।
গাড়িচালক আব্দুল লতিফ বলেন, কয়েক মাস হলো ব্রিজের গোড়া ভাঙা। আগে রোজগার বেশি হতো রাস্তা ভাঙার কারণে এ পথে মানুষ যাতায়াত কম করে। তাই এখন আমাদের আয়-রোজগারও কমেছে।
আটোচালক শহিদুল বলেন, অটো নিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে পারি না। আগে অনেক লোক যাতায়াত করলেও এখন অটো থেকে নেমে ব্রিজ পার হতে হওয়ার কারণে অল্পসংখ্যক লোক এ পথে যাতায়াত করে। যে কারণে আমরা আগের মতো যাত্রী পাই না। আমাদের আয়-রোজগার অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে।
স্থানীয় মনির হোসেন বলেন, আমাদের এই ব্রিজের পাশেই বাড়ি। আগে গাড়ি দিয়ে ব্রিজের ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে পারতাম। কিন্তু এখন পায়ে হেঁটে যেতে হয়। এতে আমাদের বাজার-সদাই নিয়ে যেতে এবং কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিতে বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সোয়াইব বিন আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সেতুর অ্যাপ্রোচটি গত বছর সংস্কার করা হয়েছিল। নতুন করে সেতুটি সংস্কার করা হবে।
ব.ম শামীম/এনএ