রাজধানী ঢাকার বড় মগবাজারে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল সুপার ইতি আফরিন সম্পা আত্মহত্যা করেননি। তাকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ আগস্ট) বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন ইতি আফরিন সম্পার বাবা আবু ছালেক মাস্টার।

তিনি দাবি করেন, ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসার জন্য সদরঘাট পর্যন্ত এসেছিল ইতি। কিন্তু কোনো একজনের ফোন পেয়ে সে বরিশালে না এসে পুনরায় হোস্টেলে ফিরে যায়। কিন্তু কে সেই ব্যক্তি, তাকে ফোন করে সে বিষয়টি জানায়নি। এরপরেই তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

আবু ছালেক মাস্টার বলেন, আমার মেয়েকে হত্যা করে মৃতদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে খুনি। ঘটনার আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি মামলার তদন্তও ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

আবু ছালেক মাস্টার বলেন, আমি মনে করি ইতির চাচাতো বোন মাহফুজা ও হোস্টেলের কেয়ারটেকার হারুন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে নিহত ইতির চাচাতো বোন বড় মগবাজারে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মাহফুজা আক্তারের মুঠোফোনে একাধিক কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার উপপরিদর্শক নারায়ণ সরকার বলেন, ইতির ময়না তদন্তের রিপোর্ট এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে আসেনি। তা ছাড়া জব্দ করা তার মুঠোফোন দুটি নিয়ে তদন্ত করছে সিআইডি বিভাগ। সেখান থেকেও কোনো রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত এবং সিআইডি’র রিপোর্ট পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত ইতি আফরিন সম্পার মা লাভলী ইয়াসমিন সেফালী, বড় ভাই সাইফুল ইসলাম এবং ভাগ্নি অনন্যা ইয়াসমিন বৃষ্টি উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকেলে রাজধানী ঢাকার বড় মগবাজারে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলের ষষ্ঠ তলার ৬০৩ নম্বর কক্ষ থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর ইতি বড় মগবাজারে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রীনিবাসের সুপার হিসেবে যোগদান করেন। তার চাচাতো বোন একই স্কুলে শিক্ষক পদে চাকরি করার সুবাদে দুজনেই একসঙ্গে থাকতেন।

চলতি বছরের ৬ জুলাই বিকেলে ইতির সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যদের কথা হয়। এরপর রাতে ফোন করার কথা বলে ইতি ফোন কেটে দেন। ওই রাতে আর ফোন না করায় পরিবারের সদস্যরা একাধিকবার ইতির মুঠোফোনে কল করে যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তার রুমমেট চাচাতো বোন মাহফুজাকে ফোন দিলে ইতি তার ভাইয়ের বাড়িতে গেছেন বলে জানান।

পরে ইতির বাবা ও স্বজনরা ঢাকায় গিয়ে দেখতে পান ওই কক্ষে ফাঁস দেওয়া মরদেহে পচন ধরেছে। ডান পা খাটের ওপরে হাঁটু ভাঁজ করা এবং বাঁ পা খাটের নিচে ঝুলানো। হাত দুটি ওপরের দিকে তোলা।

সৈয়দ মেহেদী হামান/এনএ