নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে জোর করে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কের পর এক তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীকে বিয়ে করতে এবং সন্তানের পরিচয় দিতে বলায় অভিযুক্তের লোকজন ওই তরুণীকে পিটিয়ে জখম করেছেন। বর্তমানে ওই অন্তঃসত্ত্বা তরুণী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বুধবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। একই দিন রাতে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা করেন।

অভিযুক্ত রোমান বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ১, ২, ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য মোমেনার  ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হাজীপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য মোমেনার ছেলে রোমান (৩৫) রোজার ঈদের পর থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। পারিবারিক সমস্যা থাকায় প্রায় সময় মা-বাবা, বড় ভাইয়েরা বাড়ির বাইরে থাকতেন। বাড়িতে ছোট তিন ভাইকে নিয়ে থাকতেন ওই তরুণী। রোজার ঈদের পর থেকে ভয় দেখিয়ে প্রায় রাতে ভুক্তভোগীর শয়নকক্ষে ঢুকে তার সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করে আসছিল রোমান। এ ঘটনার এক মাস পর ভুক্তভোগীর মা বাড়িতে আসলে বিষয়টি তাকে জানানো হয়।

পরবর্তীতে তিনি বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অভিযুক্ত রোমানের পরিবারকে জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের কয়েক দফায় মারধর করেন রোমান ও তার পরিবারের লোকজন। এদিকে তরুণী ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে রোমানকে বিয়ের জন্য বলেন। এতে তার পরিবারের লোকজন তাদের বাড়ি ছাড়ার এবং থানায় কোনো অভিযোগ দিলে হত্যা করবে বলে হুমকি দিতে থাকে।

বুধবার বিকেলে ঘরের পাশের পুকুর ঘাটে কাজ করছিল ওই তরুণী। এ সময় রোমান ও তার ভাই রুবেল এসে তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে ফেলে রেখে যায়। পরে বাড়ির লোকজন আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

ভুক্তভোগীর মা ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোমান ও তার লোকজন আমার মেয়েকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও পিটিয়ে জখম করেছে। এছাড়া আমাদের সপরিবারে হত্যার হুমকি দিয়েছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সানিউল কায়েস জিসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভুক্তভোগীর শরীরে বিভিন্ন নির্যাতনের দাগ পেয়েছি। বর্তমানে তিনি আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

হাসিব আল আমিন/এসপি