যুবদল কর্মী শাওন নিহত হওয়ার ঘটনায় গুলি করে হত্যার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের একটি আদালতে মামলার আবেদন করেছে বিএনপি। দলের পক্ষে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ আবেদন করেন। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ ৪২ পুলিশ সদস্যকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মোল্লার আদালতে এ মামলার আবেদন করেন রুহুল কবীর রিজভী।

এসময় রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, সংবিধানে সমাবেশ, মিছিল ও শোভাযাত্রা করার যে অধিকার রয়েছে সরকার তা হরণ করেছে। আমরা এই কথাগুলো বারবার বলি, আর এর প্রমাণ হলো পহেলা সেপ্টেম্বরের ঘটনা।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রের যে অধিকার দেওয়া হয়েছে তার কোনোটাই রাখতে চায় না সরকার। তাই আমরা মনে করছি, এক দলীয় সরকারের চূড়ান্ত যে নমুনা, তার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে সরকার। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং নিহত শাওনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

বিএনপির আইনজীবীদের কাছ থেকে জানা গেছে, মামলায় হুকুমের আসামি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলকে। প্রধান আসামি করা হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুর রহমান কনককে। এছাড়া অন্যান্য আসামি হিসেবে রয়েছেন মো. শাহরুল আলম, মো. সোহাগ, ফেরদৌস দেওয়ান, শাহাদাত হোসেনসহ অনেক পুলিশ সদস্য।

আদালত শুনানি শেষে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন। এ সময় রিজভীর পক্ষে নারায়ণগঞ্জ কোর্টের একাধিক আইনজীবী ছিলেন। বেলা ১১টায় রিজভী আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।

বিএনপির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, আপনারা সবাই জানেন, পহেলা সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল। সারা দেশে বিএনপি শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জসহ দেশের কয়েকটি স্থানে পুলিশ বিনা উস্কানিতে তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে। বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন এবং নারায়ণগঞ্জে যুবদল কর্মী শাওন বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। 

এই ঘটনা সম্পর্কে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের ভিত্তিতে আমরা মামলার আবেদন করেছি। পুলিশের উপ-পরিদর্শক কনকের গুলিতে শাওন নিহত হয়েছে, তাকে প্রধান আসামি করে মোট ৪২ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আশা করি আদালত মামলা গ্রহণ করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন।

প্রসঙ্গত, গত ১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সড়কে বিএনপির নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় শাওন নামে এক যুবক নিহত হন। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় শাওনের বড় ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

এসপি