সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে ২৩ দিনের শিশু চুরির ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার সলঙ্গা থানার শাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে জন্মের ছয় ঘণ্টা পর এক নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে হাসপাতাল থেকে ছেলে নবজাতকটি চুরি হয়ে যায়। 

নবজাতকটি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ থানার নওগাঁ গ্রামের মাজেদ-সবিতা দম্পতির সন্তান। বিয়ের দীর্ঘ ১২ বছর পর এটাই তাদের প্রথম সন্তান। বাবা-মা কোলে তুলে নেওয়ার আগেই হারিয়ে গেল বুকের ধন।

হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, পাবনার চাটমোহর থানার স্থল গ্রামের বাসিন্দা নবজাতকের নানি জয়নব তাকে কোলে করে রেখেছিলেন। এ সময় বোরকা পরিহিত এক নারী তার কাছ থেকে নবজাতককে কোলে নিয়ে দীর্ঘ সময় ঘোরাফেরা করেন। পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে তিনি নবজাতক নিয়ে পালিয়ে যান।

এ বিষয়ে নবজাতকের নানি জয়নব ঢাকা পোস্টকে বলেন, একজন মহিলা এসে বললো এই হাসপাতালেই তার ভাইয়ের ছেলে হয়েছে। কিন্তু তাকে কোলে নিতে দিচ্ছে না। তাই শিশুটিকে কোলে নিতে চাইলে আমি দেই। কিন্তু ভেতরে ডাকছে বলে আমাকে পাঠিয়ে দিয়ে শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। তাকে তিনি চেনেন না বলেও জানান।

নবজাতকের বাবা মো. আব্দুল মাজেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতরাত ৩টার দিকে আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। ১২ বছর প্রচেষ্টার পর আমার প্রথম একটি সন্তান হলো। তাকে কোলে পর্যন্ত নিতে পারলাম না। আমার শাশুড়ি ও স্ত্রীর বোনের কাছেই শিশুটি ছিল।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ৩টার দিকে প্রসূতি সবিতাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তার একটি ছেলে সন্তান হয়। কিন্তু প্রায় ছয় ঘণ্টার মধ্যেই বিকেল সোয়া ৩টার দিকে শিশুটি চুরি হয়ে যায়।

সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. জাকির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ৩টার দিকে বিষয়টি শুনলাম। পুলিশকে সিসিটিভি ফুটেজ সরবরাহ করেছি। এ বিষয়ে আমাদের কোনো অবহেলা নেই। 

এ বিষয়ে সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মো. রবিউল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিশুটি তার নানির কোলে ছিল। তার কাছ থেকে এক নারী কোলে নিয়ে রাখেন। তারপর তিনি সুকৌশলে পালিয়ে যান। আমরা পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছে। তারা এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। 

তিনি বলেন, এ ঘটনায় আমার স্টাফদের মধ্যে কেউ জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে সলঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। শিশুটিকে খুঁজে বের করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে পুলিশ। 

সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি খোঁজখবর নিচ্ছি। এ ঘটনায় প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

শুভ কুমার ঘোষ/আরএআর