কুমিল্লায় এক প্রবাসীর স্ত্রীকে (২৬) অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মেঘনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছমি উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ মামলা করেছেন। মামলায় থানার ওসি ছমি উদ্দিনকে প্রধান আসামি এবং উপপরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। 

কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোয়াজ্জেম হোসেন সহকারী পুলিশ সুপার পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী নারী মামলায় উল্লেখ করেন, তিনি জমির বিরোধ নিয়ে হওয়া মামলার খোঁজ নিতে বেশ কয়েকবার থানায় আসা যাওয়া করেন। এর সূত্র ধরে ওসি ছমি উদ্দিন এবং এসআই মোশাররফ তাকে প্রায়ই ফোন করতেন। একপর্যায়ে ওসি ছমির তাকে মেঘনা রিসোর্টে সময় কাটানোর প্রস্তাব দেন। এসআই মোশাররফও প্রায়ই ফোন করে অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। তারা ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ফোন দিতেন। প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় দুজনেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন বলে অভিযোগ করেন ওই নারী।

অভিযোগে বলা হয়, গত ২৬ আগস্ট ওই নারীর বোনের স্বামীকে গ্রেপ্তার করতে যান ওসি ছমি উদ্দিন ও এসআই মোশাররফ। সেদিন তিনি মামলার ওয়ারেন্ট দেখতে চাওয়ায় এসআই মোশাররফ তাকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে ওসির রুমে নেওয়া হয়। এ সময় রুমের দরজা বন্ধ করে ওসি তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং চিৎকার করলে মেরে ফেলার ও ধর্ষণের হুমকি দেন। তখন ওসিকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে চড়, থাপ্পড় এবং লাথি মারা হয়। ওই নারী চিৎকার শুরু করলে এসআই মোশাররফ তার গলা চেপে ধরেন। পরে তাকে আবারও অনৈতিক প্রস্তাব দেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। তবে তিনি রাজি হননি। 

ভুক্তভোগী নারী অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, তার ফোন রিসেট দেওয়া হয়। যাতে পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রমাণ তাতে না থাকে। পাশাপাশি সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কোর্টে চালান করে দেওয়া হয়। আট দিন জেলে থাকার পর তিনি জামিনে এসে মামলার প্রস্তুতি নেন এবং মামলা করেন। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মেঘনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমি উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওই নারী ভীষণ উগ্র। আমরা আসামি গ্রেপ্তার করতে গেলে তিনি ওয়ারেন্ট চান। ওয়ারেন্ট দেখালেও তিনি আমাদের  আসামিকে আনতে দেননি। পরে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় বাধ্য হয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার আনা অভিযোগ মিথ্যা এবং বানোয়াট। 

এসআই মোশাররফ বলেন, আমাদের কাছে ভিডিও রেকর্ড আছে তিনি কী করেছেন। আমরা তাকে নারী কনসটেবল দিয়ে ধরিয়ে এনেছি। তাকে কোনো অনৈতিক প্রস্তাবও দেইনি। সে খুবই উগ্র। মামলায় সে বানোয়াট অভিযোগ করেছে।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি অভিযোগ শুনেছি। এখনো কোর্ট থেকে কাগজপত্র পাইনি।

আরএআর