পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগ (ডিআইএ) সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাল সনদে চাকরি নেওয়া শিক্ষকদের নামের তালিকা প্রকাশ পেয়েছে। এ তালিকায় পঞ্চগড়ের চার উপজেলার ১১ শিক্ষকের নাম দেখা গেছে। ডিআইএ বলছে, এটা তাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শুদ্ধি অভিযান। এ অভিযানে রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাল সনদে চাকরি নেওয়া প্রথম পর্বের তালিকা থেকে পঞ্চগড়ের ১১ জনের নাম পাওয়া গেছে।

সোমবার এই প্রতিবেদনের প্রথম পর্ব প্রকাশ হলে জেলার চার উপজেলার ১১ জন শিক্ষকের নাম পাওয়া যায়। তারা জাল সনদে চাকরি করে আসছেন। এদের মধ্যে এমপিওভুক্ত সাত শিক্ষক ও বাকি চারজন এমপিওভুক্ত হতে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। 

জাল সনদে চাকরি নেওয়া ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুতসহ সরকারি কোষাগার থেকে প্রাপ্ত বেতন-ভাতা ফেরতসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানা গেছে।

জাল সনদধারী শিক্ষকরা হলেন- জেলার সদর উপজেলার উত্তর দর্জিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক শেফালী রানী রায়, জগদল দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্ম বিষয়ের সহকারী শিক্ষক রাহেলা পারভীন, দেবীগঞ্জের মল্লিকাদহ বৈদ্যনাথ দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্ম বিষয়ের সহকারী শিক্ষক দিপালী রানী, সহকারী শিক্ষক সাইরুল ইসলাম ও বাবুল চন্দ্র রায়, শালডাঙ্গা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা শিক্ষক হুমায়ুন কবির। এরা সবাই এমপিওভুক্ত শিক্ষক। এছাড়া বাগদহ ডিগ্রি কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক আশরাফুল আলম, বাগদহ ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক স্বপন কুমার রায়, চেংঠী হাজরাডাঙ্গা মহাবিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রভাষক আবু সাঈদ। তারা নন এমপিওভুক্ত শিক্ষক বলে জানা গেছে।

এদিকে আটোয়ারী উপজেলার আটোয়ারী মহিলা ডিগ্রি কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের এমপিওভুক্ত প্রভাষক মামুনুর রশিদ ও বোদা উপজেলার সাকোয়া ডিগ্রি কলেজের কৃষি বিভাগের প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল মামুনের (নন এমপিওভুক্ত) নামও তালিকায় রয়েছে। 

ডিআইএ প্রকাশিত তথ্য মতে, চলতি বছরের ২৫ মে থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শুদ্ধি অভিযানে ১ হাজার ১৫৬ জন শিক্ষকের শিক্ষাগত ও  যোগ্যতার সনদ ভুয়া পেয়েছেন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগ (ডিআইএ)। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জাল সনদধারী শিক্ষক রয়েছেন ৪৪৩ জন। এই দুই অঞ্চলের প্রথম পর্বের তালিকায় ১৯৩ জন শিক্ষকের নাম প্রকাশ পেয়েছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহীন আকতার বলেন, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগ (ডিআইএ) প্রদত্ত জাল সনদে শিক্ষকদের চাকরি নেওয়া বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনো কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তবে জাল সনদধারীদের ব্যাপারে বিধি মোতাবেক যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, শিক্ষা পরিবার তা বাস্তবায়ন করবে।

সোমবার রাতে মুঠোফোনে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (ডিআইএ) প্রফেসর অলিউল্লাহ্ মো. আজমতগীর বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ বিষয়ে আমাদের কাছে ১০ বছরের একটি হিসাব চেয়েছেন। এজন্য তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে এনটিআরসি সনদ, কম্পিউটার সনদ, গ্রন্থাগার সনদসহ এ রকম কিছু বিষয়ে ওই শিক্ষকদের সনদ ঠিক পাওয়া যায়নি।  

এসপি