বৃষ্টি কিংবা জোয়ারে প্রতিনিয়ত প্লাবিত হচ্ছে বাগেরহাট পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা। প্রতি মাসে পূর্ণিমা ও অমাবস্যার জোয়ারে অন্তত ৮-১০ দিন পানি ওঠে জনপদে। পানিবন্দী হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, ভৈরব নদ অবৈধ দখল, বাঁধ দিয়ে খাল আটকে রাখা, লেক ভরাট, আবর্জনা ফেলে পানি নামার পথ বন্ধসহ নানা কারণে দিন দিন জলাবদ্ধতা বাড়ছে।

পৌর শহরের একাধিক বাসিন্দা জানায়, শহরের বিভিন্ন জায়গায় পৌর কর্তৃপক্ষ ড্রেন নির্মাণ করলেও তা খুব একটা কাজে আসছে না। অল্প বৃষ্টিতেই বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। মুষলধারে বৃষ্টি হলে পানি সড়কের পাশের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। তখন দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকেও।

বাগেরহাট শহর ঘুরে দেখা যায়, সামান্য বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে শহরের রাহাতের মোড়, মেইনরোড, ডাকবাংলা রোড, সাধনার মোড়, নাগেরবাজার লেক রোড, হাড়িখালি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাগেরবাজার মন্দির রোড, শালতলা-প্রেসক্লাব রোড, বাগেরহাট সদর থানার সামনে, টোলপ্লাজা থেকে বাসাবাটি সড়কসহ শহরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। পানি জমে থাকে দিনের পর দিন।

পৌর এলাকার ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. মামুন মোল্লা বলেন, আমাদের ওয়ার্ডের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া পূর্ববাসাবাটি খালটি স্থানীয় মহিলা কমিশনার বালু দিয়ে ভরাট করে দিয়েছেন। এখন বৃষ্টি হোক আর জোয়ার প্লাবিত হয় আমাদের এলাকা। বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে যেতে পড়তে হয় নানা সমস্যায়।

রুহুল আমিন নামে অপর একজন বলেন, জোয়ার বা ভারী বৃষ্টিতে রাস্তায় হাঁটুসমান পানি জমে যায়। তখন রাস্তাঘাট চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, শহরের মধ্যে থাকা খালগুলোর স্লুইসগেট যদি ঠিকভাবে তদারকি করা হতো, তাহলে এত জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো না। মাসের মধ্যে ৮ দিন আমাদের পানিবন্দী থাকতে হয়। রাস্তা প্লাবিত হয়, বাসা-বাড়ির মধ্যে পানি ওঠে যায়। জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান বলেন, দুটি স্লুইস গেট ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। হঠাৎ করে নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় ভাঙা গেট দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। ইতোমধ্যে ভাঙা গেট মেরামত করা হয়েছে। আপাতত পানি প্রবেশ করতে পারবে না। এছাড়া পৌর এলাকার ড্রেনেজ ও পানি নিষ্কাশনের জন্য নভেম্বরে কাজ শুরু হবে। কাজ শেষ হলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

তানজীম আহমেদ/এসপি