গোপালগঞ্জে প্রথমবারের মতো ইউনিব্লক দিয়ে সাড়ে চার কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় বিলের ভেতর ইউনিব্লক দিয়ে সড়ক নির্মাণ করায় এক দিকে যেমন পথচারীদের দৃষ্টি কাড়ছে, অন্যদিকে কয়েক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলেছে।

জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বালাডাঙ্গা থেকে তারাইল পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। বিলের মধ্য দিয়ে ইউনিব্লকের সড়কটি যেন গ্রামের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে। প্রতিদিন এই সড়কটি দিয়ে বিলের পদ্ম ও শাপলা ফুল দেখতে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউনিব্লক অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব ও জলবায়ু সহনশীল একটা প্রডাক্ট। যে প্রডাক্ট দিয়ে সড়ক নির্মাণ করলে পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ে না। বিটুমিনের কার্পেটিংয়ের কাজ একটা নির্দিষ্ট সময় ছাড়া করা যায় না কিন্তু ইউনিব্লকের কাজ সারা বছর করা যায়। এছাড়া গাছ থেকে বৃষ্টির পানি ফোটায় ফোটায় সড়কের ওপর পড়লে  বিটুমিনের সড়ক নষ্ট হয়। কিন্তু ইউনিব্লকের সড়কে এই ভয়টি থাকে না। ইউনিব্লকের সড়ক টেকসই বেশি। 

জানা যায়, সড়কটি না থাকায় বছরের পর বছর ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে দশ গ্রামের কয়েক লাখ মানুষকে। এলাকাটি জলবেষ্টিত হওয়ায় ও কোনো সড়ক না থাকায় সারা বছর বিলের ভেতর দিয়ে নৌকায় করে যাতায়াত করতে হতো। এই এলাকার মানুষদের দশ থেকে পনেরো কিলোমিটার ঘুরে টুঙ্গিপাড়া ও সদরে যেতে হতো। সড়কটি নির্মাণের ফলে দীর্ঘ বছরের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেয়েছে দশ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ।

স্থানীয় এক বাসিন্দা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের দীর্ঘ দিনের ভোগান্তির অবসান হইছে। আগে আমাদের বিলের ভেতর দিয়ে নৌকায় করে যেতে হতো। এখন আর আমাদের নৌকায় যেতে হয় না। গাড়িতে করেই যেতে পারি। 

বালাডাঙ্গা গ্রামের এক বাসিন্দা ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাস্তাটি হওয়ায় আমাদের যাতায়াতে বেশ সুবিধা হইছে। আগে আমাদের নৌকায় করে যেতে হতো। অনেক সময় ব্যয় হতো। এখন আর হয় না। এছাড়া রাস্তাটি দেখতে ও খুব সুন্দর। পিচ ঢালাইয়ের মতো না। 

তারাইল গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, রাস্তাটি আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসছে। রাস্তাটি না হলে আমাদের ১৫-২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে সদর যাওয়া লাগত। আমরা এখন খুব সহজেই জেলা-উপজেলায় যেতে পারি। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইউনিব্লকের রাস্তা অত্যন্ত টেকসই ও খরচ কম। সরকারের দীর্ঘ মেয়াদী মেরামতের ক্ষেত্রে অপচয় রোধ করতে ইউনিব্লকের রাস্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া এই প্রথমবারের মতো গোপালগঞ্জে ইউনিব্লকের সাড়ে চার কিলোমিটার লম্বা ও ১২ ফুট চওড়া সড়ক করা হয়েছে। এছাড়া সড়কটি ওই এলাকার মানুষের জীবন মান উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।

এসপি