কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় কর্মরত এক সাংবাদিককে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে আইসিটি মামলায় জেল খাটানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে মেঘনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ মিয়া রতন শিকদারের বিরুদ্ধে। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মেঘনা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তোভোগী সাংবাদিক আব্দুল মালেক দৈনিক সংবাদ, ইংরেজি জাতীয় দৈনিক নিউ ন্যাশন এবং স্থানীয় দৈনিক রূপসী বাংলা পত্রিকার মেঘনা উপজেলা প্রতিনিধি।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক আব্দুল মালেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, কয়েকদিন আগে মেঘনা থানা পুলিশের ওসি ছমি উদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন এক নারী। আমরা সেই মামলার সংবাদ প্রকাশ করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ মিয়া রতন শিকদার আমিসহ দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার মেঘনা উপজেলা প্রতিনিধি এবং মেঘনা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শহিদুজ্জামান রনি এবং দৈনিক আমার বার্তা পত্রিকার মেঘনা উপজেলা প্রতিনিধি নাইমুল ইসলাম শহিদকে ডেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আক্তারের কক্ষে ডেকে নেন।

এসময় তিনি ওসির বিপক্ষে নিউজ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেইসঙ্গে আমাদের আইসিটি মামলার হুমকি দিয়ে জেল খাটানোর ভয় দেখান। ওই সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আক্তার, ওসি ছমি উদ্দিন কোনো প্রতিবাদ করেননি। এ ঘটনার পর থেকে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ মিয়া রতন শিকদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাংবাদিক মালেক তার একটি ফেসবুক পেজ থেকে ৩৫ মিনিটের একটি ভিডিও ছেড়েছেন। যাতে ওসি সাহেবের সঙ্গে আমাকেও জড়ানো হয়েছে। আমি তাকে ডেকে নিয়ে শুধু বললাম তুমি যে ৩৫ মিনিট ধরে ভুক্তভোগী ওই নারীর বক্তব্য নিলে, এতে তো ওসি সাহেবের মারাত্মক সম্মানহানি হয়েছে। 

তিনি বলেন, আমি মামলার হুমকি দিলেও কখনোই মামলা করতাম না। আমি শুধু বলেছি, তুমি যে পেজে এটা ছেড়েছো তার কাগজপত্র আছে? এখন যদি তোমার বিরুদ্ধে আইসিটি মামলা দেই? আপনি ঘটনার বিষয়ে ইউএনও সাহেবকে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন।

মেঘনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমি উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওখানে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে, আর কিছু নয়।

মেঘনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে আমি এখন আপনার সঙ্গে কথা বলতে পারবো না। 

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি জসীম উদ্দিন চাষী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটি খুব নিন্দনীয় কাজ। সাংবাদিকদের কাজ সাংবাদিকদের করতে দিতে হবে, তাদের মামলা হামলার ভয় দেখানো মানে হলো কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা। আমি আশা করব, সবাই যেন সাংবাদিকদের সঙ্গে সংযত আচরণ করে সেই সঙ্গে সাংবাদিকরাও যেন সংযত থাকে। 

প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট (রোববার) কুমিল্লার আদালতে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মেঘনা থানা পুলিশের ওসির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন এক নারী। এ খবর দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে খবর প্রকাশ হয়।

আরিফ আজগর/এমএএস