ভাঙন দেখা দিয়েছে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় আত্রাই নদীতে। এতে উপজেলার ভাবকি ইউনিয়নের চাকিনীয়া গ্রামে প্রায় ২০০ একর আবাদি কৃষিজমি নদীতে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাবকি ইউনিয়নের পশ্চিম-দক্ষিণে অবস্থিত চাকিনীয়া গ্রামে আত্রাই নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেছে। সম্প্রতি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় ২০০ একর আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়রা জীবিকা নির্বাহের একমাত্র সম্বল কৃষিজমি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এছাড়াও প্রতিদিন ভাঙনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর পাশ দিয়ে চলাচলের একমাত্র রাস্তা ও দেড় শতাধিক বসত বাড়ি নিয়ে মানুষজন দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন।

স্থানীয়রা জানান, দুই বছর আগে বর্ষাকালে হঠাৎ নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে আবাদি জমির ওপর দিয়ে স্রোত যায়। এতে প্রায় প্রায় ২০ একর আবাদি জমি নদীতে পরিণত হয়। এরপর গত বছর বর্ষাকালে আবারও প্রায় ১০০ একর জমি নদীতে বিলীন হয়। আর এ বছর ভাঙতে ভাঙতে একদম বসত বাড়ির কাছে এসে পৌঁছেছে। এমনকি চলাচলের একমাত্র রাস্তাও যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে। বাড়িঘরগুলো নিয়ে হুমকির মধ্যে রয়েছেন তারা। নদী ভাঙন রোধে ও বাড়িঘর রক্ষার জন্য নদীতে বাঁধ নির্মাণ করতে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছেন।

ভাবকি গ্রামের পশিরদ্দীন বলেন, গত দুই বছরে আমার ১৪ বিঘা জমি আত্রাই নদীতে চলে গেছে। জমি নদীতে চলে গেলেও কর্তৃপক্ষ নদী ভাঙন রোধে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। জমি নদীতে চলে যাওয়ায় সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

চাকিনীয়া গ্রামের আব্দুল গনি বলেন, ৪ বিঘা জমিতে ধান চাষ করে আমার সংসার চলত। এ বছর নদীতে প্রায় ৩ বিঘা জমি চলে গেছে। আমার শেষ সম্বল জমি ও গাছপালা বিলীন হয়ে গেছে। এখন বাড়ি নিয়েও হুমকির মধ্যে রয়েছি। দ্রুত নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে বাড়ি-ভিটা সব নদী গিলে খাবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন বলেন, আমারও ৫ বিঘা জমি নদীতে চলে গেছে। প্রতি বছর বর্ষার সময় নদীর পানি বেশি হলে ভাঙন শুরু হয়। তখন একের পর এক আবাদি ধানী জমি নদীতে চলে যায়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পরামর্শে নদী ভাঙনের বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করেছি। তারা জানিয়েছেন, দ্রুত নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেবেন।

ভাবকি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল আলম তুহিন বলেন, আত্রাই নদী ভাঙনের বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। দ্রুত নদী ভাঙন রোধে একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।

ইমরান আলী সোহাগ/এসএসএইচ