চাঁন-হালিমা দম্পতি দুই বছর প্রেমের পর বিয়ে করেন। সুখে-দুঃখে কাটিয়ে দিয়েছেন ৩০ বছর। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের ৩২ বছরের সম্পর্কের ইতি টেনেছে মাদক। স্বামী চাঁন মিয়া মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ায় স্ত্রী হালিমা বেগম তাকে তালাক দিয়েছেন।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ফতুল্লার সস্তাপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিয়ের আগে দুই বছর প্রেম করেন চাঁন-হালিমা। তবে তাদের প্রণয়ের সম্পর্ক দুই পরিবাবর মেনে নেয়নি সেই সময়। নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করেও তাদের একজন থেকে অন্যজনকে আলাদা করতে পারেনি। সম্প্রতি চাঁন মিয়া বেকার হয়ে পড়লে মানসিক চাপ কাটিয়ে উঠতে জড়িয়ে পড়েন মাদকের সঙ্গে। বিষয়টি হালিমা টের পেয়ে তাকে মাদক থেকে সরাতে বহু চেষ্টা করেন। তবে বখে যাওয়া চাঁন মিয়া আর সুপথে ফেরেননি। 

যতবার চাঁন মিয়াকে বোঝাতে গিয়েছেন ততবারই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে দাবি স্ত্রী হালিমা বেগমের। অবশেষে স্বামীর নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে তার হাতে তালাকনামা তুলে দেন হালিমা বেগম। তালাকনামায় মাদক সেবন ও নির্যাতনকে তালাকের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।

চাঁন মিয়া জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার বয়রাডাংগা গ্রামের মৃত ছামছুল শেখের ছেলে এবং হালিমা বেগম একই থানার তালুকদারপাড়া গ্রামের গেন্দা মিয়ার মেয়ে।

হালিমা বেগম বলেন, ৩০ বছর আগে চাঁন মিয়ার প্রেমে মগ্ন হয়ে বিয়ে করি। পরিবারের শাসন-বারণ উপেক্ষা করে তাকে জীবনসঙ্গী করি। সুখে-শান্তিতে চলছিল আমাদের সংসার। সেই স্মৃতি মনে হলে এখনো চোখের জলে বুক ভেসে যায়। চাঁন মিয়া এখন কোনো কাজ না করে গাঁজার নেশায় সারাদিন বুঁদ হয়ে থাকে। কথায় কথায় গায়ে হাত তোলে, মারধর করে। এজন্য তালাক দিয়েছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি তার সঙ্গে আর সংসার করব না। আমাদের সংসারে দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি, ছোট মেয়েও বিবাহ উপযুক্ত।

এদিকে হালিমা বেগমের সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন চাঁন মিয়া। তিনি বলেন, আমি তাকে এখনো প্রথম দেখার মতোই ভালোবাসি। সে হয়তো অভিমান করে তালাক দিয়েছে। আমি এই তালাক মানি না। বিয়ের পর থেকে আমরা ফতুল্লার সস্তাপুর এলাকায় বসবাস করছি। এই পর্যন্ত আমি কামাই রোজগার করে তাদের ভরণ-পোষণ করেছি। তবে বর্তমানে আমার কাজ না থাকায় অভাবে দিনাতিপাত করছি। আমার ধারণা সেই অভিমান থেকেই হালিমা আমাকে তালাক দিয়েছে। তবে সে তার অভিমান ভুলে তালাক প্রত্যাহার করবে বলে মনে করি।

এসপি