সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার ইয়াসমিন আক্তার শনিবার (৮ অক্টোবর) সকালে দেশে ফিরেছেন। ভোর ৪ টায় গালফ এয়ারের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন তিনি। পরে নিজ এলাকায় ফিরে এলে বেলা ১১টায় মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় তাকে। ইয়াসমিনের বাবা কুদ্দুস মিয়া বিষয়াটি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে ইয়াসমিনকে সৌদি আরবে পাঠানো দালাল কাশেম আলীকে আটক করেছে পুলিশ। চুনারুঘাট থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মোস্তফা আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কাশেম আলীকে চুনারুঘাট থানায় আটক রাখা হয়েছে। মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
 
ইয়াসমিনকে দেশে ফেরত আনার জন্য আবেদন করা সংবাদকর্মী মুজাহিদ মসি জানান, ইয়াসমিন ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর দালাল কাশেম আলী ৮/১০ জন নিয়ে তার ওপর হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। ইয়াসমিনের বাবা কুদ্দুস মিয়া বিমানবন্দর পুলিশের সহযোগিতায় কুদ্দুস মিয়ার হাত থেকে রক্ষা করেন। ইতোমধ্যে কাশেমকে চুনারুঘাট থানা পুলিশ আটক করেছে। তার বিরুদ্ধে মানব পাচারের মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
 
ইয়াসমিনের বাবা কুদ্দুস মিয়া জানান, তার মেয়ে কথা বলতে পারছে না। সৌদি আরবের যে বাসায় তার মেয়ে কাজ করতেন, সেখানে তার ওপর নির্যাতন করা হয়। এ কারণে সে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় ইয়াসমিন বাড়িতে ফোন করে বিষয়টি জানালে তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চান। পরে সরকারের সহায়তায় আজ সে দেশে ফিরে এসেছে। দেশে ফেরার পরে তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে দালাল ও তার লোকজন ইয়াসমিনকে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় বিমানবন্দর পুলিশ ও উপস্থিত লোকজনের বাধা দিলে দালালরা পালিয়ে যায়।
 
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এএইচএম ইশতিয়াক মামুন জানিয়েছেন, ইয়াসমিন মানসিক ট্রমার মধ্যে রয়েছেন। তাকে তার পরিবারের মানুষদের সময় দিতে হবে। এতে সে ট্রমা থেকে বের হতে সহায়তা করবে।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ সেপ্টেম্বর দালালের মাধ্যমে সৌদি আরবে গিয়ে গৃহকর্মীর কাজে যোগ দিয়েই নির্যাতনের শিকার হয়। একপর্যায়ে ইমো মেসেঞ্জারে বাবাকে সব কিছু জানান ইয়াসমিন। তাকে উদ্ধার করে দেশে আনার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়।

আজহারুল ইসলাম চৌধুরী/এমএএস