পাহাড়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে প্রবারণার আনন্দ পৌঁছে দিতে বিদ্যানন্দ আয়োজন করেছে ‘এক টাকায় প্রবারণা বাজার’। 

গতকাল শনিবার (৮ অক্টোবর) সকালে রাঙ্গামাটির রাজবনবিহারে এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন চাকমা সার্কেল চিফ রাজা দেবাশীষ রায়। প্রায় ১ হাজার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সুবিধাবঞ্চিত মানুষ ১ টাকার বিনিময়ে এখান থেকে বাজার করেন। 

নতুন কাপড়ের পাশাপাশি প্রতি পরিবারের জন্য ২৪টি ডিম ও মিষ্টিমুখের ব্যবস্থা করেছে বিদ্যানন্দ। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড মেম্বার জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কর্মী নিরূপা দেওয়ান, রাজবনবিহার পরিচালনা পরিষদের সেক্রেটারি অমিয় খীসা।

উদ্বোধনী বক্তব্যে রাজা দেবাশীষ রায় বলেন, করোনার সময় বিদ্যানন্দ যেভাবে পাহাড়সহ সারাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তা জাতি কখনও ভুলবে না। তারা কোনো প্রকার বিদেশি অনুদান ছাড়া শুধুমাত্র বাংলাদেশের নাগরিকদের টাকায় যেভাবে মানুষের সেবা করে যাচ্ছে তা অভাবনীয়। অতীতের মতো ভবিষ্যতেও চাকমা সার্কেল বিদ্যানন্দের ভালো কাজের সঙ্গে থাকবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নিরূপা দেওয়ান বলেন, পাহাড়ের সুসময়ে দুঃসময়ে সবসময় বিদ্যানন্দ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তারা গরিব মানুষের আত্মসম্মানবোধ অক্ষুণ্ন রেখে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। আমরা এবং রাজবনবিহারের উপাসক উপাসিকাবৃন্দ সবসময় বিদ্যানন্দের পাশে থাকব।

সভাপতির বক্তব্যে জামাল উদ্দিন বলেন, শৈল থেকে সমতট সব জায়গায় সব উৎসবে বিদ্যানন্দ মানুষের জয়গান গায়। সব জায়গায় সম্প্রীতির বাণী পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা চাই উৎসবে সবার জন্য সমান সুযোগসহ অংশগ্রহণ।

এই হাটে দেখা যায়, প্রবারণা উপলক্ষে স্টলে সারি সারি থামি, লুঙ্গি, ধুতি, টপ্স, ফ্রক, শার্ট, জুতো ও শীতের কাপড় সাজানো হয়েছে। মানুষ ১ টাকা দিয়ে নিজের পছন্দ মতো কাপড় পছন্দ করে ক্রয় করছে। এছাড়াও প্রতি পরিবার ২ ডজন করে ডিম পাচ্ছেন যেটি সম্প্রতি চালু হওয়া বিদ্যানন্দের পাহাড়ে পুষ্টি প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত। অনুষ্ঠানে আগত সকল মানুষের জন্য মিষ্টি মুখের ব্যবস্থা করেছে বিদ্যানন্দ।

প্রসঙ্গত, গত করোনার সময় বিদ্যানন্দ সারাদেশে সাত লক্ষাধিক পরিবারে এক মাসের খাদ্যসহায়তা দিয়েছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ পাহাড়ের। সম্প্রতি পাহাড়ের অপুষ্টিতে ভোগা জনসাধারণ বিশেষ করে মা ও শিশুদের জন্য বিদ্যানন্দ চালু করেছে পুষ্টি প্রোগ্রাম।

মিশু মল্লিক/এমএএস