নেত্রকোণা জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১নং ওয়ার্ডে (দুর্গাপুর) সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ছোট সতীনের কাছে হেরে গেছেন বড় সতীন। ছোট সতীন সুরমী আক্তার সুমী অটোরিকশা প্রতীকে ৫৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন এবং বড় সতীন আনোয়ারা বেগম তালা প্রতীকে মাত্র ৪ ভোট পেয়েছেন। একই পদে আরও দুজন পুরুষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে জুয়েল মিয়া টিউবওয়েল প্রতীকে ৪৪ ভোট ও আব্দুল করিম হাতি প্রতীকে ২ ভোট পেয়েছেন।

সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে এ ফলাফল ঘোষণা করেন ১নং ওয়ার্ডের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শিমু দাস।

জানা গেছে, দুই সতীন আনোয়ারা বেগম ও সুরমী আক্তার সুমীর স্বামী দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র মো. আলাউদ্দিন আলাল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরই মধ্যে জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১নং ওয়ার্ডে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হন তার দুই স্ত্রী। 

পৌর মেয়র আলাউদ্দিন আলালের ব্যবসায়িক সহযোগী ধনেশ পত্রনবীশ জানান, আলাউদ্দিন আলাল বেশ কিছুদিন ধরে গুরুতর অসুস্থ। মারাত্মক শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন তিনি। তিনি ঢাকার শ্যামলীতে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

একই পদে আলালের দুই স্ত্রীর প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে ধনেশ বলেন, ছোট স্ত্রী সুরমী আক্তার সুমির প্রতি আলাল সাহেবের পূর্ণ সমর্থন ছিল। কিন্তু বড় স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে অনেক মানা করেও তিনি ফেরাতে পারেননি।

বিজয়ী সুরমী আক্তার সুমি বলেন, আমার নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার স্বামী অনেক আগে থেকেই কাজ করে আসছিলেন। তা ছাড়া পারিবারিক সিদ্ধান্তেই আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। কিন্তু আলালের সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আনোয়ারা বেগমকে প্রার্থী করেছিল।

তিনি আরও বলেন, আমি অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে হাসপাতালে। এ অবস্থায় আমার স্বামীর পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি সব আত্মীয়-স্বজন ও পৌর কাউন্সিলরা আমার পক্ষে মাঠে কাজ করেছেন। ভোটাররাও আমার সম্পর্কে এবং আলালের সিদ্ধান্তের কথা জানতেন। সকলের সহযোগিতার কারণেই আমি বিজয়ী হতে পেরেছি।

পরাজিত আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামী তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। আর আমি আলাদা থাকি। ওই মহিলা যা বলেন তিনি তাই করেন। তার স্ত্রী হিসেবে আমিও দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু আমি যখনই কোনো পদ-পদবিতে যেতে চাইতাম তখনই অপর পক্ষ থেকে বাধা আসতো। আমারও কিছু কর্মী-সমর্থক ছিল। তারা আমাকে জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে দেখতে চেয়েছিল। তাই তাদের সমর্থনে আমি প্রার্থী হয়েছিলাম।

জিয়াউর রহমান/আরএআর