৩৪ দিন হেঁটে বাংলাদেশ ভ্রমণ করলেন নেপালি যুবক
৩৪ দিন হেঁটে বাংলাদেশ ভ্রমণ শেষ করেছেন নেপালি যুবক ইহ। তিনি বাংলাদেশ ভ্রমণ শুরু করেছিলেন দক্ষিণবঙ্গের টেকনাফ থেকে। উত্তরবঙ্গের তেঁতুলিয়ায় এসে শেষ করলেন ভ্রমণ। শুক্রবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন কাজ সম্পন্ন করে নিজ দেশ নেপালে ফিরে গেছেন ইহ।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ থেকে যাত্রা শুরু করেন নেপালি যুবক ইহ। ৩২ দিনে হেঁটে ৯০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ১৯ অক্টোবর বিকেলে পঞ্চগড় পৌঁছান। তার ভ্রমণ সঙ্গী বাংলাদেশি বন্ধু আলোকচিত্রী ও লেখক হোমায়েদ ইসহাক মুন। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে ১৩ দিন হেঁটে শুক্রবার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টে ইহকে বিদায় জানান তিনি। এ সময় ইহর সঙ্গে জিরো ফলকে ছবি তোলেন মুন।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, ২৭ বছর বয়সী যুবক ইহ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর থাপাথালি এলাকার বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই ভ্রমণে আগ্রহী ইহ। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি স্কুল ছাড়েন। ছাড়েন পরিবারও। শখ থেকেই হেঁটে বিশ্বভ্রমণে বের হয়েছেন তিনি। ভ্রমণই নাকি তার জীবন। তিনি গত পাঁচ বছরে তিনটি দেশ নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভারত প্রায় ১৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
নেপালি যুবক ইহ জানান, হেঁটে বিশ্বভ্রমণের অংশ হিসেবে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পুরো নেপাল ভ্রমণ করেন। পরে ২০২১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভারতের কারগিল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে সমগ্র ভারত ভ্রমণ করেন। সেখানে এক মাস বিশ্রাম নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ শেষে চলতি বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে এসে পৌঁছান। টানা ৩৪দিন বাংলাদেশ ভ্রমণ শেষ করে বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন রুট দিয়ে নেপালে ফিরে যাচ্ছেন। দেশে গিয়ে পরবর্তী ভ্রমণের রোডম্যাপ নির্ধারণ করবেন। তবে হেঁটে বিশ্বভ্রমণের পরবর্তী পর্যায়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ভ্রমণ করবেন বলে জানান তিনি।
ইহ জানান, বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত এক হাজার কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশ ভ্রমণ। এ নিয়ে চারটি দেশে মোট ১৪ হাজার কিলোমিটার পথ সম্পন্ন হলো তার। পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিশ্বভ্রমণে বের হয়ে নানা দেশের মানুষের সংস্কৃতি জানতে কাঠমান্ডু থেকে শুরু করেছিলেন যাত্রা। এই বিশ্বভ্রমণে যেসব দেশের মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন, ঘুরেছেন, মিশেছেন তাদের থেকে বাঙালিদেরকে আলাদা মমতার চোখে দেখলেন। তিনি উত্তরাঞ্চলের মানুষের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছেন।
ভ্রমণসঙ্গী হোমায়েদ ইসহাক মুন বলেন, নেপালি পর্যটক ইহ আমার বন্ধু। আমি পর্বতারোহী। নেপালের এভারেস্ট বেজক্যাম্পে যাওয়ার পরে কাঠমান্ডুতে ইহর সাথে আমার পরিচয় ঘটে। সেখান থেকেই বন্ধুত্ব। ইহ আমার সাথে যোগাযোগ করে বলে হেঁটে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভারত পাড়ি দেওয়ার পর বাংলাদেশ ভ্রমণ করতে চান। গত ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকায় আসার পর আমি টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। তার সাথে ১৩দিন হেঁটে আজ শুক্রবার দুপুরে বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশনে গিয়ে বিদায় জানাই। ইহকে খুব মিস করব।
এসকে দোয়েল/আরএআর