কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের উপনির্বাচন ঘিরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বাবুল আকতার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতাহার হোসেন খোকনের সমর্থকদের সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইট নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কয়েকজন। এ সময় খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাসের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। 

শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে খোকসা পৌরবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সরকারি গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলার প্রস্তুতি চলছে। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২ নভেম্বর খোকসা উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে বেশ কয়েক দিন ধরেই চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতাহার হোসেন ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বাবুল আক্তারের সমর্থকদের মধ্যে। এরই জেরে শনিবার সন্ধ্যায় খোকসা বাজারে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বাবুল আক্তারের লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতাহার হোসেনের এক সমর্থককে মারধরের অভিযোগ তোলেন। এ নিয়ে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হলে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয় এবং পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। 

পরে খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে আবারও শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ। পরে পেছন থেকে হামলাকারীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করে। 

স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতাহার হোসেন বলেন, আমার সমর্থকদের ওপর নৌকা প্রার্থীর সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে। তাদের হামলায় আমার অনেক কর্মী আহত হয়েছে।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বাবুল আকতার বলেন, মোতাহারের সমর্থকরা আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছে, অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করেছে। এতে আমাদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছে। 

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফজলুল করিম বলেন, খোকসায় বেশ কয়েক দিন ধরেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। শনিবার দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি এসপি ও ডিসি দেখছেন। 

খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিপন বিশ্বাস বলেন, নৌকার প্রার্থী বাবুল আকতার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতাহার হোসেনের সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে আমি ও ওসি ঘটনাস্থলে যাই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে ফেরার সময় আমার সরকারি গাড়ির পেছনে ইট লাগে। এতে পেছনের গ্লাস ভেঙে যায়। এ সংক্রান্ত মামলা চলমান রয়েছে। ভাঙা গাড়িটি বর্তমানে থানায় রয়েছে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে খোকসা থানার ওসি ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

রাজু আহমেদ/এসপি