বেইলি ব্রিজ সড়ক

সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বদলে গেছে খাগড়াছড়ির বেইলি ব্রিজ সড়কের চিত্র। খাগড়াছড়িতে তৈরি হয়েছে ৫৬টি পাকা সেতু। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ায় পাহাড়ের চার দশকের পুরোনো যোগাযোগ ব্যবস্তায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। 
 
আশির দশকের নির্মিত বেইলি ব্রিজ সড়ক পাহাড়ি বাসিন্দাদের কাছে ছিল একটি আতঙ্ক। ব্রিজের বিভিন্নস্থান ভেঙ্গে যাওয়ায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটত। পাহাড়িদের ভোগান্তি দূর করতে ২০১৫ সালে বেইলি ব্রিজে মেরামত করে পাকা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগ।   

ইতোমধ্যে ৪৩টি পাকা সেতু ও ১৩টি কালভাট নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আগামীকাল ৭ নভেম্বর খাগড়াছড়ির ৪২টি পাকা সেতু একযোগে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এসব সেতু নির্মিত হওয়ায় বদলে গেছে পাহাড়ি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা।

খাগড়াছড়ির সবচয়ে দুর্গম উপজেলা লক্ষ্মীছড়ি এলাকার বাসিন্দারা জানান, এক সময় এই বেইলি ব্রিজের জন্য রোগীদের জেলা সদর হাসপাতালে ঠিক সময়ে নেওয়া সম্ভব হত না। খুব কষ্টে চলাচল করতে হত এই রাস্তায়। লক্ষ্মীছড়ি থেকে মানিকছড়ি পর্যন্ত ৬ কি. মি. বেইলি ব্রিজের কারণে খুব অল্প সময়ের মধ্যে জেলা শহর বা বিভাগীয় শহরে যাতায়াত করা সম্ভব হচ্ছে। এই উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে লক্ষ্মীছড়িবাসী কৃতজ্ঞ থাকবে। 

এক পরিবহন চালক বলেন, এক সময় বেইলি ব্রিজের খারাপ অবস্থার কারণে প্রায় দুর্ঘটনা হত। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেত। রোগীদের পরিবহনেও সমস্যা ছিল। পাকা ব্রিজ হওয়ায় সংকট দূর হয়েছে। এখন আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারি। 

পাকা সেতু নির্মাণের কারণে সড়ক যোগাযোগ নিরাপদ হয়েছে বলে দাবি করেছেন পরিবহন মালিক নেতা। তবে দুর্ঘটনা এড়াতে পাহাড়ি সড়ক প্রশস্তকরণ ও বাঁক সরলীকরণের দাবি করেছেন তারা।

খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ এর সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান জানান, অনেক পুরোনো এই বেইলি ব্রীজের কারণে বেশিরভাগ সময় দুর্ঘটনা ঘটত এখন পাকা সেতু হওয়ার কারণে এসব দুর্ঘটনা কমে গেছে। পাহাড়ি জেলায় মূল সড়কে যে বাঁকগুলো রয়েছে সেগুলো কেটে সোজা করা হলে গাড়ি দুর্ঘটনা আরও কমে যাবে।

বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে প্রকল্পের আওতায় সড়ক ও জনপদ বিভাগ ২০১৫ সালে খাগড়াছড়িতে ৫৬টি ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু করে। যা চলতি বছরে শেষ হয়েছে।

খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, আগামী ৭ তারিখ নবনির্মিত পাকা সেতুগুলো উদ্বোধন করা হবে। এই পাকা সেতু নির্মাণের ফলে ওই এলাকার মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এখানকার কৃষি অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাবে। এছাড়াও পাহাড়ি এলাকার উৎপাদিত পণ্য সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে। এলাকার মানুষ লাভবান হবে। সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত হওয়ায় স্থানীয় কৃষি ও পর্যটন অর্থনীতি আরও গতিশীল হয়েছে।

জাফর সবুজ/আরকে