ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে মাদারীপুর থেকে ফরিদপুরগামী সকল ধরনের যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে মাদারীপুর থেকে ফরিদপুরগামী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। যদিও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে তাদের এ পরিবহন ধর্মঘট।

শুক্রবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে যাত্রীদের দুভোর্গের চিত্র দেখা যায়। দেখা যায়, রাস্তার পাশে রাখা আছে সারি সারি বাস। চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে শ্রমিক ও কর্মচারীরা। বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীদের জরুরি প্রয়োজনে বাড়তি টাকা দিয়ে মাদারীপুর থেকে ভেঙে ভেঙে ফরিদপুরে যেতে হচ্ছে।

৬৫ বছরের আবদুল রহিম হাওলাদার বলেন, আমার মেয়ে অনেক অসুস্থ হওয়ায় দুদিন আগে তাকে ফরিদপুর মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। আজকে সকালে বাসস্টেশনে এসে দেখি বাস বন্ধ। এখন মেয়ের কাছে যাব কিভাবে?

ফরিদপুরের বাসিন্দা রহিম মিয়া বলেন, ভেবেছিলাম বাসে করে বাড়ি যাব। কিন্তু আজ ও আগামীকাল ফরিদপুরে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ থাকায় এখন অন্য উপায়ে যেতে হবে।

কথা হয় বাস শ্রমিক দেলোয়ারের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতি সপ্তাহে ৯শ টাকা কিস্তি দিতে হয়। দুদিন গাড়ি বন্ধ থাকলে কিস্তির টাকা দিব কিভাবে!

সাংবাদিক দেখে ছুটে এলেন আরেক শ্রমিক সাইফুল বেপারি। তিনি বলেন, আমি ফরিদপুর রুটে গাড়ির হেলপার। আমি তো অন্য লাইনে গাড়িতে কাজ করতে পারব না। এই দুদিন কিভাবে চলব?

বাস ও মিনিবাস সমিতির নেতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের গাড়ি ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য আমরা গাড়ি চলাচল বন্ধ রেখেছি। সরকার যদি মহাসড়কে সকল প্রকার অবৈধ থ্রি-হুইলার (নছিমন, করিমন, ভটভটি, মাহিন্দ্র, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক ও ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল) চলাচল বন্ধ করে দেয় তাহলে বিদ্যুতের অপচয় রোধ করা সম্ভব হবে। এ সকল অবৈধ যানবাহনগুলো বিদ্যুতের অবৈধ লাইনের মাধ্যমে সরকারের বিদ্যুৎ অপচয় করছে। এতে করে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোকসানে পড়তে হচ্ছে। আমরা সরকারের সঙ্গে আছি, তদন্ত করে সকল অবৈধ যানবাহন বন্ধ করে দেওয়া হোক।

মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহান্দার আলী জাহান বলেন, এই অবৈধ সরকার ষড়যন্ত্র করে সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। কিন্তু কোনো ধর্মঘট আমাদের এই সমাবেশকে বন্ধ করতে পারবে না। আমরা জানতাম সরকার সমাবেশের আগে বাস বন্ধ করে দেবে, তাই আমরা ২-৩ দিন আগে থেকেই নেতাকর্মীদের সমাবেশস্থলে পাঠিয়ে দিয়েছি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারীপুর সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান হাওলাদার বলেন, আমরা বিএনপির সমাবেশ বানচাল করার উদ্দেশ্যে বাস চলাচল বন্ধ করিনি। মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতেই দুদিন মাদারীপুর থেকে ফরিদপুরে কোনো বাস ছেড়ে যাবে না। এছাড়াও শ্রমিক ও কর্মচারীর নিরাপত্তার চিন্তা করে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছি।

উল্লেখ্য,১১ ও ১২ নভেম্বর ফরিদপুরে কোনো ধরনের বাস প্রবেশ করতে না দেওয়ার কারণে মাদারীপুর-ফরিদপুর রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

রাকিব হাসান/এমজেইউ