কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী দল। আওয়ামী লীগের শেকড় অনেক অনেক গভীরে। ইচ্ছা করলেই ‘১০ ডিসেম্বর’ করে সরকারের পতন ঘটানো যাবে না।

তিনি বলেন, হেফাজতও এমন বলেছিল, শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়েছিল। সারা জাতি টেলিভিশনের দিকে তাকিয়েছিল- রাত মনে হয় পোহাবে না, রাতের মধ্যেই আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়ে যাবে!

রাজ্জাক বলেন, সেদিন বেগম খালেদা জিয়া খুশিতে আত্মহারা হয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বলেছিলেন শাপলা চত্বরে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য। স্বৈরাচার এরশাদ সাহেব, উনিও নিজের ফ্রিজ থেকে পানি বের করে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের পান করিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা কী দেখলাম? টেলিভিশনের দিকে তাকিয়েছিলাম রাত আড়াইটা-৩টার দিকে, শাপলা চত্বর ‘পরিষ্কার’ হয়ে গেছে। কাজেই ‘১০ ডিসেম্বর’ এ রকম কিছু করতে চাইলে পরিষ্কার হয়ে যাবেন। 

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে এসব কথা বলেন আব্দুর রাজ্জাক। সেখানে নবান্নের ধান কাটা উদ্বোধনসহ বেশকিছু অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন তিনি। 

এসময় খাদ্য উৎপাদন নিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এবার ভালো পরিমাণ আমন শস্য উৎপাদন হয়েছে। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে রিপোর্টাররা আমাদের তথ্য দিচ্ছেন, সংবাদ প্রকাশ করছেন আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইনশাআল্লাহ দেশে কোনো দুর্ভিক্ষ হবে না। খাদ্যের কোনো সংকট হবে না। তবে মানুষের একটু কষ্ট হতে পারে যদি ইউক্রেনের যুদ্ধ অব্যাহত থাকে। 

তিনি বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন খাদ্যের বড় রপ্তানিকারক দেশ। সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতিকে বার বার সতর্ক করছেন। পৃথিবীব্যাপী অর্থনীতির মন্দার কারণে একটা পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে, সেটা মোকাবিলা করার জন্য জাতি হিসেবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

স্থানীয় কৃষিখাত নিয়ে  আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চুয়াডাঙ্গার কৃষি হবে বাংলাদেশের মডেল। আধুনিক, উন্নত এবং কৃষকের জন্য লাভজনক কৃষি অর্থকরী কৃষি। কৃষকরা ফলমূল, শাক-সবজি উৎপাদন করে বেশি আয় করবেন এবং বিদেশে রপ্তানি করবেন। আমরা বিপ্লব ঘটিয়ে দেব চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর এলাকায়।

চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব সায়েদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম, জেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মনজু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে এশিয়ার বৃহত্তম কৃষি বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান দত্তনগর খামার এবং চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামে দেশের প্রথম বাণিজ্যিক আনারবাগান ও জীবননগর উপজেলার সন্তোষপুরে জাহিরুল ইসলামের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের ক্ষেত পরিদর্শন করেন কৃষিমন্ত্রী।

বিকেলে জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং ও ১৯৯৬ ব্যাচের বন্ধুদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ফ্রেন্ডস এগ্রো প্ল্যান্টের কৃষিবাগান পরিদর্শন করেন। এরপর মন্ত্রী দামুড়হুদা উপজেলার ইব্রাহিমপুর মেহেরুন্নেছা শিশু পার্কে নবান্ন উৎসব, কৃষি প্রযুক্তি মেলা ও কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথি থেকে কৃষকদের মধ্যে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করেন।

আফজালুল হক/আরএআর