হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফেরাল পুলিশ
মৌলভীবাজার ইনডোর স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমসের উদ্বোধন
একটা সময় গ্রামে গ্রামে আয়োজন করা হতো কাবাডি খেলার। সেই খেলা দেখতে ভিড় জমাতেন হাজার হাজার দর্শক। এখন আর তেমন দেখা যায় না বাংলাদেশের জাতীয় এ খেলা। আধুনিক খেলার এই জগতে অনেকটা হারিয়ে যেতে বসেছে কাবাডি বা হাডুডু। দীর্ঘ কয়েক যুগ পর সেই হারিয়ে যাওয়া ঐহিত্য ফিরিয়ে আনল মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ।
শনিবার (৬ মার্চ) বিকেলে মৌলভীবাজার ইনডোর স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমসে সুরমা জোনের কাবাডি প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হয়। এতে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ, ফেনী ও চাঁদপুর জেলার ছেলেরা অংশগ্রহণ করেছে। এবারের আয়োজনে ছেলে ও মেয়েরা উভয় খেলবে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কাবাডি খেলা।
বিজ্ঞাপন
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, আধুনিকতার ছোঁয়া ও কালের বিবর্তনে শিশু-কিশোররা এখন নতুন ধরনের খেলায় মত্ত। মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে হারিয়ে যাওয়া কাবাডি খেলা নতুন প্রজন্মের মধ্যে আলো ছড়াবে বলে মনে করি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার ও ঘরে ঘরে ভিডিও গেমের দৌরাত্ম্যে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী সব ধরনের খেলাধুলা। বইপুস্তকে খেলার নাম দেখলেও বাস্তবে খেলার সুযোগ হয়ে ওঠেনি, এমন শিশুর সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছেই। আর হারিয়ে যাওয়ার খেলায় যুক্ত হয়েছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী কাবাডি খেলার নামও, যা আমাদের দেশের জাতীয় খেলা।
মো. শাহাব উদ্দিন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী
বিজ্ঞাপন
এ সময় মন্ত্রী বর্তমান প্রজন্মকে পরিবেশ দূষণ ও বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব বিষয়ে নিজে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি অন্যকেও সচেতন করার আহ্বান জানান।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান, পৌর মেয়র মো. ফজলুর রহমান, ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কাবাডি প্রতিযোগিতার আহ্বায়ক ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান শুধু স্বাধীনতাযুদ্ধেই দেশকে নেতৃত্ব দেননি। তিনি একজন দক্ষ ফুটবলার হিসেবে চল্লিশের দশকের বিখ্যাত ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের অধিনায়ক হিসেবেও দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ধানমন্ডি ক্লাবেরও প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। জাতির পিতা নিজে যেমন খেলোয়াড় ছিলেন, তেমনি তার পরিবারের সদস্য তথা দেশের মানুষকেও খেলাধুলায় উদ্বুদ্ধ করতেন।
বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথই অনুসরণ করে গেছেন তাঁর দুই ছেলে শেখ কামাল ও শেখ জামাল। এই দুই ভাইয়ের মধ্যে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন শেখ কামাল। ফুটবল, ক্রিকেট ও বাস্কেটবল― তিন খেলাতেই সমান পারদর্শী ছিলেন। আজকের আবাহনী ক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শেখ কামাল। শেখ কামালের পাশাপাশি শেখ জামালও অবদান রেখেছেন আবাহনী প্রতিষ্ঠায়। তিনি ভালো মানের হকি খেলোয়াড়ও ছিলেন। শুধু তা-ই নয়, বঙ্গবন্ধুর পুত্রবধূ শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল খুকি ছিলেন বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ অ্যাথলেটদের একজন, জানান তিনি।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমসে ছেলে ও মেয়েরা উভয় খেলবে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী কাবাডি খেলা। খেলায় সুরমা জোনে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ, ফেনী ও চাঁদপুর জেলার ছেলেরা অংশগ্রহণ করেছে। মেয়েদের ইভেন্টে মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ জেলা অংশগ্রহণ করছে। উদ্বোধনী দিনে মৌলভীবাজার জেলার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সুনামগঞ্জ জেলার সঙ্গে চাঁদপুর জেলার খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ওমর ফারুক নাঈম/এনএ