রাজবাড়ী থানা

রাজবাড়ীতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল শেষে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপের অভিযোগে জেলা ছাত্রদ‌লের আহ্বায়ক ও সদস্য স‌চিবসহ ১৪ জন‌কে আসামি ক‌রে মামলা দা‌য়ের ক‌রে‌ছে পু‌লিশ। গতকাল রোববার রাতে রাজবাড়ী সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেলিম হোসেন রকি মামলাটি দায়ের করেন। সোমবার (২১ নভেম্বর) মামলার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাত হোসেন।

মামলার আসামিরা হলেন, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো.আরিফুল ইসলাম রোমান (৩৫),জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. শাহিনুর রহমান শাহিন (৩৪), যুবদল কর্মী খায়রুল আলম বকুল (৪৫), মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন সম্রাট (৩৫), মো. আরিফ (৩৫), মনোয়ার হোসেন মিন্টু (৩৬), মুরাদ মন্ডল (৩৪), গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ গিটার (৪০), ছাত্রদল কর্মী মো. আক্তার হোসেন (২৮), মো. শিপন শেখ(১৯), মো. রকি (৩০), মো. মাসুদ (৩১), মো. হাসান মিজি (২৭), মো. রিফাত (২৮)।

জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সোনারামপুরে পুলিশের গুলিতে ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়ার মৃত্যুর প্রতিবাদে গতকাল সোমবার রাজবাড়ী জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম রোমান ও সদস্য সচিব মো. শাহিনুর রহমান শাহিনের নেতৃত্বে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির কার্যালয়ে একটি বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছিল জেলা ছাত্রদল। বিক্ষোভ মিছিলটি বিএনপির কার্যালয় থেকে বের হতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশটি বিএনপির কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়। পরে মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে ফিরে আসেন নেতা-কর্মীরা। এ সময় দলীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম রোমান ও সদস্য সচিব শাহিনুর রহমান শাহিন।

পরে সমবেশ শেষ হতেই ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা রাজবাড়ী জেলা বিএনপির কার্যালয়ের পাশে জড়ো হয়ে একটি ককটেল বিস্ফোরণ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। তখন শহরে ডিউটিরত পুলিশের টহল টিম ঘটনাস্থলে গেলে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা লাঠি দিয়ে হামলা চালায়। এতে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাশেদুল ও কনস্টেবল হাসান আহত হন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে সাতটি তাজা ককটেল জব্দ করার পাশাপাশি দুইজন ছাত্রদল কর্মীকে আটক করা হয়।

রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাত হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আমাদের দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। সে সময় ঘটনাস্থল তল্লাশি করে সাতটি তাজা ককটেলসহ দুই ছাত্রদল কর্মীকে আটক করা হয়। ঐ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ ১৪ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম রোমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ করছিলাম। বরং পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশে বাধা প্রদান করে। আমরা কোনো ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাইনি। এটা পুলিশের একটা নাটক। আমাদেরকে হয়রানি করার জন্য তারা নাটকটি সাজিয়ে আমাদের নামে মামলা দিয়েছে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশ ব্যাহত করতেই এই পরিকল্পনা। আমরা এসব জেনে বুঝেই রাজনীতি করি। আমাদের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নামে যে মামলা হয়েছে সেগুলো মিথ্য ও বানোয়াট।

মীর সামসুজ্জামান/আরকে