কামরান আখঞ্জী

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ব্যাডমিন্টন খেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত হয় অষ্টম শ্রেণির মাদরাসাছাত্র কামরান আখঞ্জী (১৪)। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাত ৯টার দিকে হবিগঞ্জ মর্গে নেওয়া হয়। কিন্তু সকল চিকিৎসক প্রধানমন্ত্রীর সম্মেলনে থাকায় বৃহস্পতিবার রাতে ময়নাতদন্ত সম্ভব হয়নি। তাই ছেলের মরদেহ গ্রহণ করতে বাবা-মাকে পরদিন শুক্রবার সারাদিন শেষে রাতটাও কাটাতে হয়েছে মর্গের সামনে। 

অবশেষে দীর্ঘ ৩৮ ঘণ্টা পর শনিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর ১১টায় ময়নাতদন্তের পর কামরান আখঞ্জীর নিথর দেহ ফিরে পান তার বাবা-মা। কামরান উপজেলার চলিতাতলা মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

কামরানের বাবা আব্দুল হাই আখঞ্জী বলেন, ছেলে খেলতে গিয়ে মারা যায়। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল না। আমরা চেয়েছিলাম ময়নাতদন্ত ছাড়াই আমার ছেলের দাফন করতে। আইনি জটিলতার কারণে শেষ পর্যন্ত মর্গে আনতে হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবহেলা করেছে। আমার ছেলের মরদেহ মর্গের ভেতরে রেখে এই দীর্ঘসময় পার করতে আমাদের খুব কষ্ট হয়েছে। আমি ও কামরানের মা সন্তান হারানোর ব্যথাই সহ্য করতে পারছি না। এর মধ্যে মর্গের ভেতরে বরফ-চা পাতা দেওয়া আমার ছেলের মৃতদেহ রেখে বাইরে আমাদের সময় কাটছিল না।

ময়নাতদন্তে এতো সময় কেন লাগল এই প্রশ্নের জবাবে হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মোমিন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, হাসপাতালের সকল চিকিৎসক প্রধানমন্ত্রীর একটি সম্মেলনে ছিলেন। যে কারণে ময়নাতদন্ত শেষ করতে দেরি হয়ে গেছে। শনিবার দুপুর ১২টায় ময়নাতদন্তের পর ওই ছাত্রের মরদেহ পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বাহুবল মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রকিবুল হাসান খান ঢাকা পোস্টকে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে মাদরাসাছাত্র কামরান আখঞ্জীর মরদেহ সুরতহালের পর ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়। দীর্ঘ সময় পর শনিবার দুপুরে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। এরপর পরিবারের কাছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মরদেহ বুঝিয়ে দিয়েছে।

কামরান আখঞ্জী গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ব্যাডমিন্টন খেলছিল। হঠাৎ অসাবধানতাবশত খেলার জন্য টানা বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে কামরানে মৃত্যু হয়। রাত ৯টার দিকে উদ্ধারের পর তার মরদেহ হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় বাহুবল মডেল থানা পুলিশ।

আজহারুল ইসলাম চৌধুরী/আরকে