কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে বিএনপি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কৃত কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সাক্কুর অনুসারীরা। শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকাল থেকেই কুমিল্লা টাউন হল মাঠের পূর্ব পাশে সাক্কুর অনুসারীরা অবস্থান নেন। তাদের হাতে সাক্কুর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড এবং ফেস্টুন ছিল। 

বহিষ্কৃত সাক্কু গণসমাবেশ মঞ্চের পূর্ব পাশে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মঞ্চে ছিলেন। এ সময় নেতাকর্মীদের পানি এবং খাবার সরবরাহ করেন তিনি।

গণসমাবেশে আসা সাক্কুর অনুসারী মিনহাজুল নামে এক বিএনপি কর্মী ঢাকা পোস্টকে বলেন,  মনিরুল হক সাক্কু দীর্ঘদিন কুমিল্লায় বিএনপির রাজনীতিকে সক্রিয় রেখেছিলেন। প্রয়াত সাবেক মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেন বীর প্রতীকের মৃত্যুর পর আমরা সাক্কু ভাইয়ের সঙ্গে রাজনীতি করে আসছি। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়েছি। মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। আমাদের নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা আমাদের নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চাই। 

জালাল হোসেন নামে সাক্কুর এক অনুসারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের নেতা জনগণের চাপে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। জনগণের কথা রাখতে গিয়ে তিনি আজ বিএনপি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন। আজ আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা কুমিল্লার মাটিতে পা ফেলে আমাদেরকে ধন্য করেছেন। আমরা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে আমাদের নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাই।

এ বিষয়ে মনিরুল হক সাক্কু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ৪২ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতি করছি। দলের জন্য আমার অনেক ত্যাগ রয়েছে। দলের থেকে অনেক কিছু পেয়েছিও। আমি বিএনপির সঙ্গে থাকতে চাই। বিএনপি আমাকে না রাখলে আমি যাব কোথায়? আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের সবার সঙ্গে কথা বলেছি বহিষ্কারের পর থেকেই। তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। বলেছেন কাজ করে যেতে।

তিনি বলেন, বিএনপির আজকের যে গণসমাবেশ, এই সমাবেশে আমার ২০ হাজার নেতাকর্মী অংশ নিয়েছে। গত ৩ দিন আগে থেকে আমার ১৪ তলা ভবনের ৭৮টি ফ্ল্যাট দূর-দূরান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীদের জন্য রেডি করেছিলাম। আমার এসব ফ্ল্যাটে অন্তত ১০ হাজার নেতাকর্মী থেকেছে, তিন বেলা করে পেট ভরে খেয়েছে। দল আমাকে যদি আর নাও নেয়, আমি আমার শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত দলের জন্য এমনভাবেই কাজ করে যাব। আমার কোনো পিছুটান নেই। একটি মাত্র মেয়ে, তাকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছি, স্বামীর সঙ্গে কানাডায় থাকে। আমার কোনো পিছুটান নেই। 

এ বিষয়ে বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোশতাক মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিএনপি এখন সরকার পতনের আন্দোলনে আছে। বহিষ্কারটা বড় বিষয় নয়। যারা প্রকৃত দল করে তারা দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে রাজপথে থাকবে। দল যদি কাউকে বহিষ্কার করে তবে সেটা তারেক রহমানের নির্দেশেই, আবার কারও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করাটাও তারেক রহমানের হাতেই। 

প্রসঙ্গত, গত ১৫ জুন অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে অংশ নিয়েছিলেন সাবেক দুইবারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

আরিফ আজগর/আরএআর