কুকুরটি হেরে গেল ছোবলে, সাপটি অমানবিকতায়
লড়তে লড়তে নিস্তেজ হয়ে প্রাণ গেল উভয়ের। তবে কুকুর যে প্রভুভক্ত প্রাণী সেটা বিষাক্ত গোখরার সঙ্গে লড়াই করে জীবন দেয়ার মাধ্যমে আবারও প্রমাণ পাওয়া গেল।
আদরের কুকুরের মৃত্যুর খবর জেনে অঝোরে কাঁদছেন মনিব সুজন। এমন দৃশ্য দেখে এলাকাবাসী বিষাক্ত গোখরাটিকেও পিটিয়ে মেরেছে। গতকাল সোমবার রাতে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের জুড়ান মোল্লার পাড়ায় এ ঘটনাটি ঘটে।
বিজ্ঞাপন
ওই গ্রামের সহিদ কাজীর ছেলে সুজনের খুব আদরের পোষা কুকুর সোমবার রাত ৮টার দিকে পৌনে ৩ হাত লম্বা বিষাক্ত গোখরা সাপটিকে কামড়ে ধরে বাড়ি থেকে রাস্তার ওপর নিয়ে আসে। সেখানে সাপ-কুকুরের মধ্যে চলে তুমুল লড়াই।
এ সময় স্থানীয় মুদি দোকানদার সিদ্দিক শেখ, রমজান আলী, সাহিদা বেগম, রোজিনা বেগম, নিরব রাজ, শিমুল খানসহ অনেকেই সাপ-কুকুরের এ লড়াই উপভোগ করেন। লড়াইয়ের মাঝে সাপটি কয়েকবার কুকুরটিকে ছোবল মারে। এতে কুকুরটি অল্প সময়ের মধ্যে দুর্বল হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সাপটি বিজয়ী বেশে চলে যেতে চেষ্টা করলে মুদি দোকানদার সিদ্দিক লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, কুকুরটি আমাদের সকলের খুব প্রিয় ছিল। প্রথমে ভয় পেলেও সাপের কামড়ে ওর অসহায় মৃত্যু দেখে আর ঠিক থাকতে পারিনি। তাই সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলি।
গৃহবধূ সাহিদা বেগম ও রোজিনা বেগম বলেন, কুকুরটি নিজের জীবন দিয়ে বাড়ির লোকজনকে রক্ষা করে গেল। বিষাক্ত এই সাপের কামড়ে আমাদের যে কারও মৃত্যু হতে পারতো।
সুজনের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমরা পরিবারের সবাই কুকুরটিকে খুব ভালোবাসতাম। বাড়ির খাবার ছাড়াও নিজেদের শিশু বাচ্চার মতো কুকুরটিকে দোকান থেকে নিয়মিত বিস্কুট, পাউরুটি কিনে দিতাম। আমার ছেলে বাড়িতে নেই। নানা বাড়ি বেড়াতে গেছে। সে প্রিয় কুকুরের মৃত্যুর খবর শুনে অঝোরে কান্না করছে।
তিনি বলেন, কুকুরটি তার নিজের জীবনের মায়া না করে আমাদের জীবন বাঁচাতে বিষাক্ত সাপের সঙ্গে লড়াই করে তার জীবন দিয়ে গেল। ওর জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে।
মীর সামসুজ্জামান/এমএএস