‘পাঁচ মাস পর বয়স্ক ভাতার টাকা আসিল। যারা টাকা পাইছে ওমা কহিল খালা টাকা আইসছে। মুইও দেখিনু ১৫১০ টাকা আইসছে। আইজ ১২টা ১০ মিনিটে টাকা আসিল। তারপর বিকাশের দোকানত গেনু। পরে ১টা ১০ মিনিটে দেখেছু টাকা উধাও হয়ে গেইছে। তারপরে চেয়ারম্যানের কাছত গেনু। চেয়ারম্যান ইউএনও অফিস পাঠাল। এইঠে আসে থানাত যাবা কহিল। থানাত গেনু কেউ কিছু কহিলনি। গরিব মাইনসের হামার আইন নাই। হামার গরিব লোকলার টাকা বড় লোকরা খাচে। হামার কষ্টের শেষ নাই। অফিস-থানাত ঘুরিনু কোনো সমাধান পানুনি। কেমনে এলা কি করিম আর ওষুধ কি দিয়া কিনিম?’

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের সামনে এভাবেই মনের ক্ষোভ জানাচ্ছিলেন ৬৮ বছর বয়সী বৃদ্ধা আশিয়া বেওয়া। তিনি সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাস করেন।

ক্ষোভ নিয়ে আশিয়া বেওয়া আরও বলেন, ‘বয়স কি আর কম হইল। কপাল খানতে কষ্ট গেলনি। স্বামীডাও মারা গেইছে ৩৫ বছর আগুত। একটা বেটা আর একটা বেটির মা মুই। বিহা হওয়ার পর ওদের সংসার নিয়াই ওরা ঢাকাত থাকে। মোক দেখার সময় নাই। একলায় জীবন চলছে মোর। স্বামীর কিছুই ছিলনি। মোক কিছুই দে যাবা পারেনি। মাইসের বাড়িত কাজ করু আর খাও। এলা সরকারি একটা ঘর পাইছু। এলা ঐঠেই থাকেচু। আর বয়স্ক ভাতার টাকা দেহেনে ওষুধ কিনু। এলা ওষুধ কিনিবার টাকা কুন্ঠে পাম। হামাক সরাসরি টাকালা দেওয়া হোক। মোবাইলত লাগিবেনি। মোবাইলত দিলে টাকা গায়েব হয়ে যাচে।’

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মোবাইলের মাধ্যমে টাকা পাওয়ার পর থেকে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। তবে বিকল্প কোনো উপায় নেই।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তাহের মো. শামসুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃদ্ধা মহিলা আমার কাছে এসেছিলেন। তার টাকা হয়তো অন্য কেউ তুলে নিয়েছেন। আমি আইনের আশ্রয় নিতে বলেছি।

এম এ সামাদ/এমজেইউ