নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, বন্ধ হওয়া গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) উপ-নির্বাচন পুনরায় অনুষ্ঠিত করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আগামী ৪ তারিখের নির্বাচন যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়, সাধারণ মানুষ যেন কোনো প্রকার ভয়ভীতি ছাড়াই ভোট দিতে পারে সেজন্য সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। চ্যালেঞ্জ নেওয়া হয়েছে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে যেকোনো উপায়ে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করা হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গাইবান্ধা-৫ শূন্য আসনে নির্বাচন উপলক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা এমন প্রস্তুতি নিয়েছি কোনো ভোটার যেন বলতে না পারে আমি ভোট দিতে পারিনি। এ অঞ্চলের মানুষ নির্দিদ্ধায় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবে। পাশাপাশি এই নির্বাচনে কোনো অনিয়মকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না, সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক করে নির্বাচন কমিশনার বলেন, আপনারা জানেন গত উপ-নির্বাচনে দায়িত্ব অবহেলার দায়ে পাঁচ পুলিশ সদস্য ওপর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আগামী ৪ জানুযারি নির্বাচনে দায়িত্ব অবহেলা কিংবা অনিয়নের প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা চাই আগামী ৪ তারিখের নির্বাচন স্মরণীয় হয়ে থাকুক। এই জাতি ও এই দেশের মানুষ জানুক এই নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু, সুন্দর অবাধ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারে।

মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নির্বাচন কর্মকর্তা, প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীরাসহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত জুলাইয়ে জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৫ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। এরপর গত ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণের পর সিইসি প্রথমে ৫০টি কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেন। এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তাও একটি কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেন। পরে ভোটগ্রহণের যৌক্তিকতা না থাকায় পুরো নির্বাচন বন্ধ করে দেয় ইসি। এরপর গঠিত তদন্ত কমিটি ৬৮৫ জনের শুনানি নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পায় ওই ৫১ কেন্দ্রে। এছাড়া অবশিষ্ট কেন্দ্রগুলোর সিসি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখে অনিয়মের প্রমাণ পায় তদন্ত কমিটি।

পরে সেই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গাইবান্ধার এক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, পাঁচ এসআই, নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ ১৩৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বরখাস্তসহ বিভিন্ন শাস্তির সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। এই শাস্তি বাস্তবায়ন করে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে আগামী এক মাসের মধ্যে অবহিত করার নির্দেশও দেয় নির্বাচন কমিশন।

রিপন আকন্দ/আরকে