বরগুনার বেতাগী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে রশিদ ছাড়া অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল অনলাইনে প্রকাশ করার কথা বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে এই অর্থ আদায় করা হয়েছে। এতে স্কুল কর্তৃপক্ষ ৭০০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৮৪ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়।

তবে গত মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল কার্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। টাকা নিয়েও আগের পদ্ধতিতে ফল প্রকাশ করার পর থেকেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরগুনার বেতাগী উপজেলার বেতাগী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষার শুরুর পূর্বে বিদ্যালয়ের বেতন ও পরীক্ষার ফি এর পাশাপাশি প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ফলাফল অনলাইনকরণ ফি বাবদ অতিরিক্ত ১২০ টাকা দিতে হয়েছে। তবে এর জন্য কোনো শিক্ষার্থীকে রশিদ দেওয়া হয়নি। তাদের শুধু বেতন ও পরীক্ষার ফি'র রশিদ দেওয়া হয়। এছাড়াও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির জন্য জরিমানাসহ বিভিন্ন খাত দেখিয়েও অর্থ আদায় করে আসছে বলেও জানা যায়। এ বিষয়ে কথা বললে পরীক্ষায় নানা জটিলতা ও ফলাফল বিপর্যয়ের আশঙ্কা চিন্তা করে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা ভয়ে এর প্রতিবাদ করে না।

রেজাউল কবির জুয়েল নামে এক অভিভাবক বলেন, আমি যখন আমার ছেলের বার্ষিক পরীক্ষার ফির টাকা দিতে যাই তখন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত টাকার পরেও অতিরিক্ত ১২০ টাকা নেয়। অতিরিক্ত এই টাকা উল্লেখ না করেই তারা রশিদ দিয়েছে। তারা বলেছে সারা বছরের অনলাইন ফি বাবদ প্রত্যেকের কাছ থেকেই এই টাকা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই বিদ্যালয়ে এর আগে কখনও ফলাফল বা অন্য কিছু অনলাইনে প্রকাশ হতে দেখিনি।

রঞ্জন মল্লিক নামে আরেক অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ের বার্ষিক পরীক্ষার ফি দেয়ার সময় ফলাফল অনলাইন করার কথা জানিয়ে তাঁরা অতিরিক্ত ১২০ টাকা নিয়েছে। কিন্তু তাঁরা ফলাফল অনলাইনে প্রকাশ করেনি। তাছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানে রশিদ ছাড়া টাকা নেয়ার কথা কখনও শুনিনি।

এ বিষয়ে বেতাগী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়য়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম কবির বলেন, করোনায় পরীক্ষা বন্ধ হবার আগে ফলাফল অনলাইনে হত। সামনে পরীক্ষার ফলাফল ও ভর্তি অনলাইনে চালু করব। সারা বছরের অনলাইন খরচ হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১২০ টাকা নেওয়া হয়েছে। সরকারিভাবে এর জন্য কোনো বরাদ্দ আমরা পাই না। আমরা পরবর্তীতে এই টাকার জন্য রশিদের ব্যবস্থা চালু করব।

বেতাগী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুর রহমান বলেন, ফলাফল অনলাইনে প্রকাশের জন্য টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি এই বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন বলেন, রশিদ ছাড়া কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা আদায় করা যাবে না। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

খান নাঈম/আরকে