শিক্ষকদের পাওনা বুঝিয়ে দিতে বাধ্য হন শিক্ষা কর্মকর্তা/ ছবি : ঢাকা পোস্ট

‘ডিসেমিনাশন অব নিউ কারিকুলাম’ শীর্ষক স্কিমের আওতায় উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষক তৈরির লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণের সম্মানী নিয়ে চরম হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। সম্মানীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে ট্রেনিংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষকরা। পরে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এসে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে স্বাভাবিক করেন। 

শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) পাবনা শহরের রাঘবপুরের শহীদ আহম্মদ রফিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ট্রেনিং সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। বিকেল ৪টা থেকে শুরু হওয়া এ ঘটনা রাত ৮টার দিকে স্বাভাবিক হয়। 

শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, সারাদেশে এ ট্রেনিং চলছে। গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে আমাদের ৬ দিনের ট্রেনিং শুরু হয়ে আজকে শেষ হয়েছে। এতে আমরা পাবনা ও সিরাজগঞ্জ থেকে ৩২৪ জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করি। এর মধ্যে আমরা সিরাজগঞ্জ থেকেই দেড় শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করি। ট্রেনিং শেষে আজকে আমাদের সিরাজগঞ্জের শিক্ষকদের ১১ হাজার ৪৭০ টাকা করে সম্মানী ভাতা দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা জানতে পারি সিরাজগঞ্জে ট্রেনিং নেওয়া পাবনার শিক্ষকদের ১৩ হাজার ৮৮০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।‌ বিষয়টি আমরা ট্রেনিংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের জানালে তারা আমাদের বিভিন্ন হুমকি দেন। এজন্য ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য আমরা সিরাজগঞ্জের শিক্ষকরা অবস্থান নিয়ে তাদের অবরুদ্ধ করি। 

শিক্ষকরা আরও অভিযোগ করেন, ট্রেনিং চলাকালীন যে খাবার দেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের। সকালে কলা-বিস্কুট, দুপুরে সাদা ভাত আর এক টুকরো মাংস অথবা মাছ এবং বিকেলে ৫ টাকা দামের শুধু এক প্যাকেট বিস্কুট। কিন্তু এ খাবারের জন্য প্রতিজন শিক্ষকের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪৫০ টাকা করে। এসব নিয়ে অভিযোগ দিলেই শিক্ষকদের বিভিন্নভাবে হুমকিসহ হয়রানি করা হয়েছে। 

বিকেল ৪টার দিকে শিক্ষকদের এমন অবস্থানের প্রায় ২ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রোস্তম আলী হেলালী। বিষয়টি নিয়ে ভুল স্বীকার করে শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে এক পর্যায়ে তাদের পাওনা টাকা বুঝিয়ে দিতে বাধ্য হন। ঘটনাস্থলে সাংবাদিকরা উপস্থিত হলে তাদেরকে এ বিষয়টি নিয়ে কোনো সংবাদ না করার অনুরোধ করেন তিনি। 

গণমাধ্যমকে তিনি প্রথমে এড়িয়ে গেলেও এক পর্যায়ে বলেন, আসলে এখানে আমাদের একটু ভুল হয়েছে। আমরা শুধু যাওয়ার ভাড়া ধরেছিলাম। শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে আমাদের প্রথমে এটিই জানানো হয়েছিল। কিন্তু গতকাল রাতে আমাদের ম্যাসেজ দেওয়া হয়েছে যে, আসা-যাওয়ার ভাড়া দিতে হবে। আমরা এটি খেয়াল করিনি। তাই এমনটা হয়েছে। তবে এখানে টাকা আত্মসাতের কোনো চেষ্টা করা হয়নি। 

এছাড়াও শিক্ষকদের হয়রানি ও হুমকি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে পাবনা জেলা প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক মোহাম্মদ সাইফুজ্জামান খান ও জেলা অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম সামিউল ইসলাম অস্বীকার করেছেন। 

রাকিব হাসনাত/এফকে