শিক্ষকের টিকটক ভিডিও ভাইরাল, বিব্রত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় শহীদ আলাউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালামের (রুবেল) বেশ কয়েকটি টিকটক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে এলাকাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহীদ আলাউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম (রুবেল) (ABUL KAMAL) নামে টিকটক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। যেখানে ছয় শতাধিক ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি। ওই টিকটক অ্যাকাউন্টে ফলোয়ার সংখ্যা ১ হাজার ১৯১ জন, লাইক সংখ্যা ৭ হাজার ৫৬৭ এবং তিনি ফলো করছেন ৩৯৫ জনকে। ওই শিক্ষকের টিকটক ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, বিভিন্ন ভাইরাল গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নানান অঙ্গভঙ্গিতে নেচে ভিডিও মেকিং করেছেন তিনি। শিক্ষকের এমন কাণ্ডে হতবাক এলাকার সচেতন নাগরিক সমাজ।
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, স্যারের ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় এলাকার লোকজন বলাবলি করছেন- তোদের স্কুলের স্যার নাকি টিকটক ভিডিওতে নাচ-গান করে ইন্টারনেটে ছাড়েন? মানুষের এমন প্রশ্ন শুনতে শুনতে আমরা লজ্জিত।
সাদ্দাম হোসেন নামে বিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষার্থী বলেন, শহীদ আলাউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের মতো স্বনামধন্য স্কুলে এরকম শিক্ষক ভাবতেই লজ্জা লাগে। যে স্কুলের শিক্ষকদের দেখলে শ্রদ্ধায় মাথা নত হত, আর এখন সেই স্কুলের শিক্ষার্থী পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করি। দু-একজন শিক্ষকের এরকম খামখেয়ালি আচরণের কারণে প্রতিষ্ঠানের বদনাম হচ্ছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের খতিয়ে দেখা জরুরি।
বিজ্ঞাপন
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান খান মিলন জানান, শিক্ষক হলেন মানুষ গড়ার কারিগর। যেই শিক্ষক এমন টিকটিক ভিডিও করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কারণ এমন শিক্ষক দিয়ে ভালো মানুষ তৈরি করা যাবে না। শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে এই টিকটক যায় না। দ্রুতই ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
এ বিষয়ে শিক্ষক আবুল কালামের (রুবেল) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনেকেই তো টিকটক করে। তাদের টিকটক তো সামনে আসে না। তাহলে আমারটি কেন? এছাড়া টিকটক তো আর নিষিদ্ধ না। এখানে খারাপ-ভালো সবই আছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে আমি ব্যবহার করি। তবে প্রশাসন থেকে যদি মানা করা হয় তাহলে টিকটক ভিডিও করা বন্ধ করে দেব।
এ বিষয়ে কথা বলতে শহীদ আলাউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জালাল উদ্দিনের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
শহীদ আলাউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রায়হান উদ্দিন আকন্দ বলেন, লোকমুখে ওই শিক্ষকের টিকটক ভিডিওর কথা শুনেছি। তবে আমি দেখিনি। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাকুন্দিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস.এম. সাইফুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন বলেন, একজন এ বিষয়টি নিয়ে আমাকে কল দিয়েছিলেন। বিষয়টি এখনো আমি দেখিনি। যদি নৈতিক অবক্ষয়ের মধ্যে পড়ে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসকে রাসেল/এমজেইউ