গাইবান্ধায় দুটি মসজিদের সরকারি বরাদ্দের অর্থ আত্মসাতের সংবাদ প্রকাশের জেড়ে জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার ও গাইবান্ধা প্রতিনিধি রিপন আকন্দের নামে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন সাংবাদিকরা। 

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে প্রেসক্লাব গাইবান্ধার দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার বরাবর এ স্মারকলিপি পাঠানো হয়। 

এর আগে প্রেসক্লাব গাইবান্ধার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ একটি প্রতিনিধি দল গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক অলিউর রহমানের মাধ্যমে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি পাঠাতে চাইলে তিনি স্মারকলিপি নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সাংবাদিকদের সরাসরি রংপুরে গিয়ে স্মারকলিপি দিতে বলেন জেলা প্রশাসক। পরে মুঠোফোনে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে তার অফিশিয়াল ই-মেইলে স্মারকলিপির একটি কপি পাঠানো হয়।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর ‘ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মসজিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে ঢাকা পোস্ট। মসজিদ সংস্কারের সরকারি অর্থ চেয়ারম্যান মোসাব্বির আত্মসাত করার বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এমন দুর্নীতির ঘটনা ধামাচাপা দিতে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার ও গাইবান্ধা প্রতিনিধি রিপন আকন্দের নামে রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে আইসিটি আইনে মামলা করেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোসাব্বির হোসেন।

স্মারকলিপিতে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারসহ রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের টিআর, ভিজিএফসহ সরকারি সকল বরাদ্দ খতিয়ে দেখে তার বিরুদ্ধে আইনানুগসহ ব্যবস্থা গ্রহণে বিভাগীয় কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

এ ছাড়াও স্মারকলিপিতে প্রেসক্লাব গাইবান্ধার সিনিয়র সহ-সভাপতি ও দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের রবিন সেনের নামে সাবেক গাইবান্ধা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের জামাতার একটি মানহানির মামলার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

স্মারকলিপি দেওয়ার পর প্রেসক্লাব গাইবান্ধার সভাপতি খালেদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জাভেদ হোসেন বলেন, এই প্রতিবেদনটি ঢাকা পোস্ট ছাড়াও স্থানীয়, জাতীয় দৈনিকসহ একাধিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে ও হয়রানির উদ্দেশ্যে ঢাকা পোস্টের গাইবান্ধা প্রতিনিধি রিপন আকন্দ ও সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকারের নামে মিথ্যা মামলাটি করেছেন চেয়ারম্যান। আমরা চাই তদন্ত সাপেক্ষে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

উল্লেখ্য, ২০২১-২০২২ অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) সাধারণের দ্বিতীয় পর্যায়ের উপজেলাভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ইউনিয়নের রোস্তমের মোড়ে অবস্থিত নূরে রহমত জামে মসজিদের নামে বরাদ্দ হওয়া টিআর-এর ৫৫ হাজার টাকার মধ্যে মসজিদ কমিটির হাতে মাত্র ১৪ হাজার টাকা দিয়ে বাকি ৪১ হাজার টাকা প্রকল্প সভাপতি মহিলা সদস্যর স্বামী মাহবুর রহমান, ছয় ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যান মোসাব্বির ভাগ করে নেন। এছাড়া ইউনিয়নের অপর একটি প্রকল্প জগৎরায় গোপালপুরের জাবালে রহমত জামে মসজিদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৫৭ হাজার টাকা। ইউপি চেয়ারম্যান মোসাব্বির ওই মসজিদ কমিটির সভাপতি আবুল হোসেনকে প্রকল্প সভাপতি বানিয়ে, মসজিদে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে বাকি ৩২ হাজার টাকা একাই আত্মসাৎ করেন।

রিপন আকন্দ/আরএআর