বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার টঙ্গীর তুরাগতীরে দ্বিতীয় পর্বের আয়োজক তাবলিগ জামাতের মুরব্বিদের কাছে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান হস্তান্তর করেছে প্রশাসন। মাঠ বুঝে নেওয়ার পরপরই মাওলানা সাদপন্থি আয়োজকরা মাঠ গুছিয়ে নিতে কাজ শুরু করেছেন।  

মাঠ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সচিব আব্দুল হান্নান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবির, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এসএম সাইফুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মামুনুল করিম, গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মো. ইব্রাহিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া প্রথম পর্বের আয়োজক মাওলানা জুবায়েরপন্থি মুরব্বি প্রকৌশলী মাহফুজ, মিডিয়া সমন্বয়কারী জহির ইবনে মুসলিম এবং সাদপন্থি মুরব্বি প্রকৌশলী শাহ মো. মহিবুল্লাহ, প্রকৌশলী মো. নূর মোহাম্মদ, ড. মো. আব্দুস সালাম, ড. রেজাউল করিম ও হাজী মনির হোসেন উপস্থিত ছিলেন। 

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আয়োজক মাওলানা জুবায়েরপন্থিদের কাছ থেকে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ইজতেমাস্থল বুঝে নিয়ে দুপুরে দ্বিতীয় পর্বের আয়োজক মুরব্বিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা দেখেছি ময়দানের প্যান্ডেল, বিদ্যুৎ সংযোগসহ ব্যবহার্য সব কিছু ঠিকঠাক আছে কিনা। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা আয়োজকদের যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয় সে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করছি সকলের সহযোগিতায় ইজতেমার প্রথম পর্বের ন্যায় দ্বিতীয় পর্বও সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে। 

গত ১৩, ১৪ এবং ১৫ জানুয়ারি তিন দিন তুরাগ তীরে মাওলানা জুবায়েরপন্থিরা বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আয়োজন করেছিলেন। সে সময় কোনো সমস্যা হয়নি। ভালোভাবে তাদের ইজতেমা সম্পন্ন হয়েছে। 

মাওলানা সাদপন্থি তাবলিগ জামাত পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. মিজান বলেন, দুপুরে আমারা জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে ইজতেমা মাঠ বুঝে নিয়েছি। বুধবার থেকে আমাদের তাবলিগের সাথীরা মাঠে জমায়েত হতে থাকবেন। এর আগেই পুরো মাঠ গুছিয়ে নেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ। তবে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা নিয়ে ফেসবুকে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি মুসল্লিদের ওইসব অপপ্রচারে কান না দিতে অনুরোধ করেন। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা সকলের সহযোগিতায় সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবেই  সম্পন্ন হবে। এজন্য সকল প্রস্তুতি তাদের রয়েছে। ইজতেমা ময়দানে আগের পর্বের মুসল্লিদের পরিত্যাক্ত খাবার-ময়লা পরিষ্কার করা হচ্ছে। প্রশাসনও তাদের সার্বিক সহযোগিতা করছে। 

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, ইজতেমায় জরুরি পরিচ্ছন্নতা সেবা প্রদানে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সার্বক্ষণিক গার্বেজ ট্রাকসহ প্রায় ৬০০ পরিচ্ছন্নকর্মী মোতায়েন রয়েছে। ইজতেমা ময়দানের দক্ষিণ পাশে তুরাগ নদীর তীরে বর্জ্য ফেলার জন্য অস্থায়ীভাবে ড্যাম্পিং পয়েন্ট তৈরি করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্লিসিং পাউডারসহ অন্যান্য উপকরণ মজুত রয়েছে। এ পর্বেও আয়োজকদের প্রস্তুতি কাজে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।  

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়ে প্রথম পর্বে যে ব্যবস্থা ছিল একই ব্যবস্থা থাকবে। আগামী শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় পর্বের মাওলানা সাদ অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমা। তা চলবে রোববার (২২ জানুয়ারি) পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত তাদের পূর্ণ স্থাপনা থাকবে। 

শিহাব খান/আরএআর