বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু গ্রামে রোহিঙ্গাদের কারণে তুমব্রু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সব ধরণের পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট জনেরা। বুধবার (২৫ জানুয়ারি) পৃথক পৃথকভাবে তারা এ উদ্বেগের কথা জানান।

বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রাজা মিয়া বলেন, ৬ দিন অতিবাহিত হলেও সোয়া ৪ হাজার রোহিঙ্গা তুমব্রু গ্রামে অবস্থান করছে। এ বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের অপরিকল্পিতভাবে বসতি নির্মাণের কারণে তারা খোলা জায়গায় পায়খানা-প্রশ্রাব করছে। সর্বত্র দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশী আর মিয়ানমারের পরিবেশ ভিন্ন। এ কারণে একটি ছোট্ট তুমব্রু গ্রামে এতো রোহিঙ্গার বসবাস মারাত্মকভাবে পরিবেশ নষ্ট করছে। এছাড়াও রয়েছে মাদকাসক্ত রোহিঙ্গাদের তান্ডবও।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খায়রুল বশর বলেন, রোহিঙ্গা অন্য পরিবেশের এক জাতিগোষ্ঠী। তারা তুমব্রুর শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সব ধরণের পরিবেশ নষ্ঠ করছে। বিশেষ করে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। 

তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম বলেন, তার স্কুলের নিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৬২ জন। তারা কদিন ধরে অনিয়মিত। শূন্যরেখায় আগুন ও গোলাগুলির ঘটনার প্রথম দিন ১৮ জানুয়ারি তার স্কুলে শিক্ষার্থী আসেনি ভয়ে। কারণ সে দিনই এ সব আশ্রিত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ প্রথম জড়ো হতে থাকে স্কুল বারান্দা ও উঠানে।

তিনি আরও বলেন, শুক্র-শনি দুদিন স্কুল বন্ধ থাকায় অবস্থা তেমন বোঝা যায়নি। রোববার শিক্ষার্থী উপস্থিত হয় মাত্র ২শ জন। পরের দিন সোমরার উপস্থিতি ছিল ৩শ। তবে সরকারের জাতীয় কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে মঙ্গলবার শিক্ষার্থী স্কুলে আসে ৪৯০ জন।

তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘেষে এতো রোহিঙ্গা আশ্রয় নিলে শিক্ষার মারাত্মক ক্ষতি হবে। বাচ্চারা আসতে চাচ্ছে না। দ্রুত ব্যবস্থা দরকার।

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে উপজেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভায় কয়েকজন সদস্য তুমব্রু গ্রামে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এ গ্রামের একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানকার  প্রায় ৬ শত শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে হবে। তাদের শিক্ষা জীবন ঝুুঁকিতে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমেন শর্মা এ বিষয়ে বলেন, দুটো বিষয়ই অতি গুরুত্বপূর্ণ। একটি রাষ্ট্রীয় অপরটি শিশু শিক্ষার্থীদের স্বার্থ নির্ভর করে। ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে আলোচনা করে আমি তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকা থেকে এসব আশ্রিত রোহিঙ্গাদের পাশে কোথাও সরিয়ে দেওয়ার দ্রুত ব্যবস্থা নেব। 

সাইদুল ফরহাদ/আরকে