চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটনের (আপেল প্রতীক) ১১টি নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। এসময় ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে পোস্টার ও ব্যানার।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাতে শহরের বাতেন খাঁর মোড়ের প্রধান নির্বাচনী অফিস, উদয়ন মোড়, রেলগেট, বিদিরপুর, উদয় সংঘ মোড় ও ফুড অফিস মোড়ের অফিস ভাংচুর করা হয়ে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকদের দাবি, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ ভাঙচুর করেছেন। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাঈমা খান বাতেন খাঁর মোড়ের ভাংচুর করা প্রধান নির্বাচনী অফিস পরিদর্শন করেছেন। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা জানান, রাত ৯টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে ২০ থেকে ২২ জন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে অতর্কিতভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটনের নির্বাচনী অফিসে হামলা চালায়। এ সময় তারা কার্যালয়ের চেয়ার, টেবিলসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম ভাঙচুর করে দ্রুত পালিয়ে যায়। এছাড়া রেলগেট মোড়ের নির্বাচনী অফিসেও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটন অভিযোগ করে বলেন, রোববার রাত ৯টার দিকে আমার ১১টি নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করেছেন তারা। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন এ কাজটি করেছেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে প্রত্যক্ষদর্শীরা ভাংচুরকারীদের নাম বলেছেন। আমি বিশ্বাস করি, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।

তবে নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা ভাঙচুরের সাথে জড়িত নয় বলে জানিয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ। মুঠোফোনে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, উল্টো নৌকা প্রতীকেরই কয়েকটি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খাঁন জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাংচুরের ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছে। তারা মাঠে কাজ করছেন। নির্বাচনে এরকম বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর।

সংসদীয় আসন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) থেকে বিএনপির সংসদ সদস্য হানুরুর রশীদ পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। পরে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল ৫ জানুয়ারি, বাছাই করা হয় ৮ জানুয়ারি, প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৫ জানুয়ারি ও ১৬ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ হয়। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের মোট ভোটার ৪ লাখ ১১ হাজার ৪৯৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৮ হাজার ৮৮৩ জন ও নারী ভোটার ২ লাখ ৫ হাজার ৬১২ জন। এ আসনে ১৭২টি ভোট কেন্দ্রের ১২৪০টি ভোট কক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ভোটাররা।

মো. জাহাঙ্গীর আলম/এফকে