নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটের মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা গ্রহণ করেছেন আদালত। কিন্তু মামলা রেকর্ড (নথিভুক্ত) করা হয়নি। তবে আদালত কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ওসিকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

রোববার (১৪ মার্চ) বেলা তিনটায় মামলাটির শুনানিতে বিচারক এস এম মোসলেউদ্দিন মিজান প্রাথমিক শুনানি শেষে বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা গ্রহণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের পিপি গুলজার আহমেদ জুয়েল।

তবে এ ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানায় এরই মধ্যে কোনো মামলা হয়েছে কি না, তা ১৫ দিনের মধ্যে আদালতকে প্রতিবেদন দিতে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তার আগে বাদীকে জাতীয় পরিচয়পত্র দাখিলের আদেশ দেন।

এর আগে রোববার দুপুরে আলাউদ্দিনের ছোট ভাই এমদাদ হোসেন রাজু মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা নিতে পুলিশ রাজি না হওয়ায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৪ নম্বর আমলি আদালতে এ আবেদন করেন। এটা নিশ্চিত করেছিলেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হারুনুর রশিদ হাওলাদার।

মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া কাদের মির্জার আরেক ভাই সাহাদাত হোসেনকে দ্বিতীয় ও কাদের মির্জার ছেলে মির্জা মাশরুর কাদের তাশিককে তৃতীয় আসামিসহ ১৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করে এই মামলা করা হয়।

কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের বিবদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে সিএনজি অটোরিকশাচালক আলাউদ্দিনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তার ভাই মামলাটি থানায় করার চেষ্টায় সফল না হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হন।

নিহত আলাউদ্দিনের ছোট ভাই মো. এমদাদ হোসেন জানান, ১১ মার্চ (বৃহস্পতিবার) বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে প্রধান আসামিসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলার এজাহার দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রধান আসামি মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নাম বাদ না দেওয়ায় শনিবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ এজাহারটি রেকর্ড করেনি, বিধায় আজ আদালতের শরণাপন্ন হলাম।
 
উল্লেখ্য, গত ৯ মার্চ গুলিতে নিহত আলাউদ্দিনের ছোট ভাই রাজু ১১ মার্চ রাতে কাদের মির্জাকে প্রধান আসামি করে মামলা করার জন্য একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় যান। মামলার এজাহারে ত্রুটি থাকার অজুহাতে পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি বলে রাজু তখন সাংবাদিকদের জানান।

পরদিন ১২ মার্চ সকাল থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জ থানায় পুলিশ মামলা না নেওয়ায় রোববার (১৪ মার্চ) আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। এ ছাড়া পুলিশ মামলা না নেওয়ায় নিহত আলাউদ্দিনের পরিবারের পক্ষ থেকে ১২ মার্চ সন্ধ্যায় কোম্পানীগঞ্জের চর ফকিরা ইউনিয়নের চরকালি গ্রামের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

এ সময় তারা অভিযোগ করেন, মামলার প্রধান আসামি বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নাম বাদ দিলে মামলা নেওয়া হবে বলে তাদের জানানো হয়। পরে নাম বাদ না দেওয়ায় মামলা নেয়নি পুলিশ।

হাসিব আল আমিন/এনএ