নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব অনেক পুরোনো। এটি একটি বিশ্বস্ত বন্ধুত্বের নিদর্শন। গঙ্গা বিলাসের এই ভ্রমণ দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও একধাপ উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এই প্রমোদতরীতে যারা রয়েছেন তারা সবাই বিদেশি। এই ভ্রমণের মধ্য দিয়ে দুই দেশের বন্ধুত্বের গল্প ছড়িয়ে পড়বে অনেক দেশে। সেইসঙ্গে এই ভ্রমণ বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও বেশি সুদৃঢ় করবে।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে আসা ভারতীয় প্রমোদতরী গঙ্গা বিলাসে আগত অতিথিদের সম্মানে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, গঙ্গা বিলাসে ভ্রমণের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের জনগণকে জানার এক অনন্য প্রচেষ্টা। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো দেখা যাবে। এই ভ্রমণ পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল স্থানীয় অর্থনীতিকে উপকৃত করবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, এটা শুধু দুই দেশের পর্যটনের সম্ভাবনা উন্মোচন করার উপায় নয়, মানুষের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের একটি নতুন উপায়ও। এছাড়া যে নদীগুলো ঐতিহ্যগতভাবে ভারত ও বাংলাদেশকে যুক্ত করেছে, গঙ্গা বিলাস সেই সংযোগকে পুনরুজ্জীবিত করতে সক্ষম হবে।

এর আগে দুপুর ২টায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডোর গোলাম সাদেক, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান প্রমুখ জাহাজের পর্যটকদের ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান। পরে আগত অতিথিদের সম্মানে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। সভা শেষে গঙ্গা বিলাসের আদলে তৈরি করা বিশাল আকারের এক কেক কাটা হয়।

উল্লেখ্য, বিলাসবহুল পাঁচ তারকা মানের এই জাহাজটি গত ১৩ জানুয়ারি ভারতের বেনারস রাজ্য থেকে ছেড়ে আসে। জাহাজটি ৫১ দিনে সফর শেষ করবে। জাহাজটি ভারতের পাঁচটি রাজ্য এবং গঙ্গা, যমুনা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্রসহ ২৭টি নদ-নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। বাংলাদেশে ১৪ দিন থাকার কথা রয়েছে। বাংলাদেশে অবস্থানকালে গঙ্গা বিলাস খুলনা জেলার কয়রার আংটিহারা হয়ে ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনে প্রবেশ করে আজ মোংলা বন্দরে পৌছেঁ। এরপর বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ, খানজাহান আলীর মাজার এলাকা ঘুরবেন বিদেশি পর্যটকরা। পরে নৌপথে বরিশাল হয়ে মেঘনা ঘাটে অবস্থান করে সোনারগাঁও ও ঢাকায় ভ্রমণ করবেন প্রমোদতরী গঙ্গা বিলাসের যাত্রীরা। পরবর্তীতে টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ হয়ে কুড়িগ্রামের চিলমারী ও রংপুরের দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করবেন পর্যটকরা। পরে চিলমারী থেকে ভারতে প্রবেশ করবে পাঁচ তারকা মানের এই জাহাজটি।

মোহাম্মদ মিলন/এমজেইউ