দেশের মানুষ মন খুলে কথা বলতে পারে না
সম্মেলনে বক্তব্য দেন রুহুল কবির রিজভী
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ মুখে বলে একটা, আর কাজে করে অন্যটা। পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রনায়ক দেশের জনগণকে ছেড়ে যায়নি। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় শেখ মুজিবুর এ দেশের জনগণকে ছেড়ে পাকিস্তানিদের সঙ্গে চলে গিয়েছিলেন। এটাই হলো আওয়ামী লীগ। এ কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সঙ্গে শেখ পরিবারের কোনো সম্পর্ক নেই।
বোরবার (১৪ মার্চ) দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বিজ্ঞাপন
বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় তাজউদ্দীন বেশি দিন দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারেন নাই। এর কারণ তিনি স্বাধীনতাযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার পরিবারের কারও বর্তমান সরকারের মন্ত্রিপরিষদে জায়গা হয়নি। গত ১২ বছরে দেশের বিচারবহির্ভূত অসংখ্য হত্যা, খুন, গুম হয়েছে। তিনি দেশের একজন নারী প্রধানমন্ত্রী অথচ তার সময়ে দেশের অসংখ্য নারী নির্যাতন হয়েছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে দেশের খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়েছে। জ্বালানির দাম বেড়েছে, দেশের শিক্ষাব্যবস্থার অবনতি হয়েছে। দেশের মানুষের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। আজ দেশের মানুষ মন খুলে কথা বলতে পারে না, দেশের গণমাধ্যমে বিতর্ক করা যাবে না। তবু আমাদের বলতে হবে শেখ হাসিনা গণতান্ত্রিক। দেশের সাধারণ মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে কাতরাচ্ছে। তবু বলতে হবে শেখ হাসিনার সরকার ভালো। আর এসব না বললে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। রাতের আঁধারে ধরে নিয়ে গুম করে দেবে।
বিজ্ঞাপন
শেখ হাসিনার বাবার সময়ে একজন বিখ্যাত ছড়াকার বলেছিলেন, বলা যাবে না, সওয়া যাবে না, কওয়া যাবে না কথা, রক্ত দিয়ে পেলাম এমন স্বাধীনতা। আজকে তাই আপনি কথা বলতে পারবেন না, প্রতিবাদ করতে পারবেন না। আর প্রতিবাদ করলেই আপনার অবস্থা হবে মোশতাকের মতো, যোগ করেন রিজভী।
রিজভী বলেন, এই দেশের দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ইতিহাস শেখ হাসিনা জানেন না। আপনি মিথ্যা ইতিহাস দেশের জনগণকে বলেন। আপনি হাজী শরীয়তুল্লাহ, ক্ষুদিরাম, তিতুমীরের ইতিহাস পড়েননি বলেই আপনি জানেন না এ দেশে সাধারণ মানুষ ব্রিটিশদের বিতাড়িত করেছে। ইতিহাস জানেন না বলেই আপনি দেশে মিথ্যার বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলেছেন। এই মিথ্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হচ্ছেন শেখ হাসিনা।
মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জামিলুর রশিদ খানের সভাপতিত্বে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহীর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আফরোজা খান রিতা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্ত প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সম্মেলন শেষে মোট ৪৫টি ভোটের মধ্যে ৪২টি ভোট পেয়ে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কিমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আফরোজা খান রিতা এবং ২০ ভোটে সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন এস এ কবির জিন্নাহ।
সোহেল হোসেন/এনএ