অবশেষে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় গাড়ি নিতে আসছেন বগুড়ার দুই আসনে উপনির্বাচনে হেরে যাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। আগামীকাল মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) তিনি উপজেলার নরপতি গ্রামের প্রিন্সিপাল এম মখলিছুর রহমানের বাড়িতে আসছেন। 

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে মুঠোফোনে হিরো আলম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তিনি বেলা ১১টার দিকে মখলিছুর রহমানের বাড়িতে আসবেন। 

এম মখলিছুর রহমান চুনারুঘাট উপজেলার নরপতি হাজী আব্দুল জব্বার জিএল একাডেমি অ্যান্ড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। তিনি ফেসবুকে বগুড়ার উপনির্বাচনের সময় হিরো আলমকে একটি নোয়াহ গাড়ি উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেন। ওই গাড়িটি নিতেই তার বাড়িতে আসছেন হিরো আলম। 

এদিকে প্রিন্সিপাল এম মখলিছুর রহমান সোমবার তার ফেসবুক পেজে হিরো আলমের আসার বিষয়টি নিশ্চিত করে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। এতে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের তার বাড়িতে যেতে নিষেধ করেন। যদি গণমাধ্যমকর্মীরা তার বাড়িতে যান তাহলে তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন বলেও হুমকি দেন।  সোমবার সারাদিন তার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য কল করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। 

এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি হিরো আলমকে নিজের নোয়াহ গাড়ি উপহার দেওয়ার কথা জানিয়ে ফেসবুকে একটি ভিডিও দেন চুনারুঘাট উপজেলার নরপতি গ্রামের প্রিন্সিপাল এম মখলিছুর রহমান। ৩ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। 

ভিডিওতে এম মখলিছুর রহমান বলেন, ‘হিরো আলম একসময় জিরো ছিলেন। জিরো থেকে তিনি হিরো হয়েছেন। হিরো আলম এখন সোনার টুকরা। দুই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। বগুড়ার মানুষ জানের চাইতে তাঁকে বেশি ভালোবাসেন। তিনি বগুড়ার মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন। নির্বাচনে ফল যেটাই আসুক না কেন, সিলেট বিভাগের পক্ষ থেকে গাড়িটি তাঁকে উপহার দিতে চাই।’

প্রিন্সিপাল এম মখলিছুর রহমান সম্পর্কে জানতে চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য মোছা. সেফুল আক্তার বলেন, আমার জানা মতে ওই গাড়িটিই তার একমাত্র সম্বল। তার অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন ভালো নয়। তার এই গাড়ি উপহার দেওয়ার বিষয়টি এলাকাতে নানাভাবে আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে। তিনি নরপতি হাজী আব্দুল জব্বার জিএল একাডেমি অ্যান্ড হাইস্কুল নামে একটি কিন্ডারগার্টেনের অধ্যক্ষ। এর ওপর ভিত্তি করেই তার সংসার চলে। তার ২ মেয়ে ও ২ ছেলে রয়েছে। 

তিনি বলেন, কোনোভাবেই তার গাড়িটি তার কাছ থেকে নেওয়া ঠিক হবে না। এলাকায় খোঁজ নিলেই তার অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা জানতে পারবেন।

প্রসঙ্গত, বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী জাসদ নেতা রেজাউল করিম তানসেন বিজয়ী হয়েছেন। মশাল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ২০ হাজার ৪০৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিরো আলম একতারা প্রতীকে ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট পেয়েছেন। তিনি মাত্র ৮৩৪ ভোটে হেরে গেছেন। 

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এই আসনে ভোটগ্রহণ করা হয়। নির্বাচনে মোট ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই আসনের ৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯ জন ভোটারের মধ্যে ৭৮ হাজার ৫৭০ জন ভোট দেন। যা শতকরায় ২৩ দশমিক ৯২ শতাংশ।

অন্যদিকে বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু ৪৯ হাজার ৩৩৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়েছেন। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম একতারা প্রতীকে মাত্র ৫ হাজার ২৭৪ ভোট পেয়েছেন। 

আজহারুল মুরাদ/আরএআর