সদর উপজেলার চরাঞ্চলের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আবারও আওয়ামী লীগের দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ককটেল ও গুলিবিদ্ধ হয়ে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। 

মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মুন্সিকান্দি, বেহেরকান্দি, ঢালিকান্দি নোয়াদ্দা ও লক্ষ্মীদেবী গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধরা হলেন, ফারুক হোসেন, প্রাণ মোল্লা ও সুমন মোল্লা।

দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নটির বর্তমান চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপন হোসেন পাটোয়ারী এবং একই উপজেলার আ.লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও ইউনিয়নটির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মহসিনা হকের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়নটির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান রিপন হোসেন পাটোয়ারী এবং সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক পক্ষের মধ্যে এক যুগ ধরে বিরোধ চলে আসছে। সামান্য বিষয় নিয়ে প্রায় সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায় তারা। 

গত ২৪ জানুয়ারি মহসিনার সমর্থক জিয়া সরকার নামে একজনকে কুপিয়ে এবং গুলি করে আহত করে রিপনের ভাই সিপন পাটোয়ারী। এরপর থেকে সমগ্র ইউনিয়নে উত্তেজনা চলছিল। মঙ্গলবার সকালে রিপনের এক সমর্থককে মারধর করে মহসিনার লোকজন। পরে দুপুরের দিকে রিপন পাটোয়ারী লোকজন সঙ্গবদ্ধ হয়ে কংশপুরায় হামলা শুরু করে। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। মুহূর্তেই ইউনিয়নটির মুন্সীকান্দি, বেহেরকান্দি, ঢালিকান্দি, নোয়াদ্ধা ও লক্ষিদিবি গ্রামে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে গ্রামে গ্রামে বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট, ককটেল বিস্ফোরণ ও গোলাগুলি শুরু হয়। 

এতে মহসিনা পক্ষের লোকজনের বেশি ক্ষতি হয়। সবমিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে উভয়পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছে। আহতরা গ্রেপ্তার এড়াতে গোপনে হাসপাতাল, বিভিন্ন ক্লিনিক ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নেয়।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শৈবাল বসাক বলেন, বিকেল চারটার দিকে সংঘর্ষের ঘটনায় চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে দুজন হাসপাতাল আসে। ওই দুটি ছেলের চোখের মধ্যে লোহাজাতীয় কিছু আটকা ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদেরকে ঢাকা চক্ষু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ইউনিয়নটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শওকত দেওয়ান বলেন, দুপুরে রিপন চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনীর নেতা তার আপন ছোট ভাই শিপন পাটোয়ারীর নেতৃত্বে হঠাৎ করে গ্রামের নিরহ মানুষের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট শুরু হয়। ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিহত করতে গেলে তাদের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করে গুলি চালায়।

এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থান্দার খাইরুল হাসান বলেন, কয়েকদিন যাবৎ ওই দুই পক্ষের মধ্যে  উত্তেজনা চলছিল। আজকে রিপন হোসেন পক্ষের লোকজন সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে ঘটনা শুরু করে। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোনো পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ করা হয়নি। পুলিশের হাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও ফুটেজ এসেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ব.ম শামীম/এমএএস