আওলাদ হোসেন মুসা

আট মাস আগে বিয়ে করেছেন আওলাদ হোসেন মুসা (২৫)। বাবা নেই তার‌। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তৃতীয় আওলাদ হোসেন মুসা। চাচাতো ভাই আবু জাফর সিদ্দিক তারেকের সঙ্গে স্যানিটারি সামগ্রী কিনতে গত মঙ্গলবার (৭ মার্চ) ঢাকার গুলিস্তানে গিয়েছিলেন তিনি।

বিকেলে গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে ক্যাফে কুইন রেস্টুরেন্টে খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারেক ও আওলাদ হোসেন। এ সময় ওই ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তারেকের। গুরুতর আহত হন আওলাদ। তার শরীরের ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (৮ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান আওলাদ। তিনি বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত জামান শফিকের ছেলে।

 নিহত আওলাদ হোসেন মুসা পেশায় একজন হোটেল ব্যবসায়ী ছিলেন। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সকাল ১০টায় জানাজা শেষে তাকে বালুয়াকান্দি পশ্চিমপাড়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এদিকে একই ঘটনায় দুই যুবকের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

নিহত আওলাদ হোসেন মুসার খালাতো বোন ফারহানা আক্তার এনি বলেন, মাত্র ৮ মাস আগে বিয়ে করেছে আওলাদ। ওরা ছয় ভাইবোন। এদের মধ্যে আওলাদ ছিল তৃতীয়। সে তার চাচাতো ভাই তারেকের সঙ্গে স্যানেটারি সামগ্রী কেনার জন্য ঢাকায় গিয়েছিল। পরে ওখানে বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘঠনাস্থলেই মারা যায় তারেক। আর আওলাদ গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে মারা যায়। আজ সকাল ১০টার দিকে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। 

আরও পড়ুন : রেস্টুরেন্টে প্রাণ গেল তারেকের, কর্মস্থলে মহিউদ্দিনের

গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে মুন্সীগঞ্জের তিনজন রয়েছেন। 

তারা হলেন- মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি পশ্চিমপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত মোজাম্মেল হক খোকার ছেলে আবু জাফর সিদ্দিক তারেক (৩৩), একই গ্রামের মৃত জামান শফিকের ছেলে আওলাদ হোসেন মুসা ও সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের সৈয়দপুর এলাকার মৃত সমির আখন্দের ছেলে মহিউদ্দিন আখন্দ (৫০)। 

মহিউদ্দিন ক্যাফে কুইন মার্কেটের একটি স্যানিটারি দোকানের ম্যানেজার ছিলেন। গত দুই বছর যাবত ওই মার্কেটের আজাদ স্যানিটারিতে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। 

ব.ম শামীম/আরএআর